অর্থনীতি

তৃতীয় প্রান্তিকে আদানি পাওয়ারের রাজস্ব বেড়েছে ৭২ শতাংশ

ভারতের বৃহত্তম বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আদানি পোর্টফোলিওর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার লিমিটেড সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করেছে। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ এ শেষ হওয়া আদানি পাওয়ারের ৯ মাসের এ আর্থিক ফলাফলে বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা গেছে। কোম্পানির রাজস্ব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৪০৫ কোটি রুপি, যা বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠানটির একটি শক্তিশালী পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। আর্থিক বিবরণীতে দেখা যায়, তিন মাসে কোম্পানির মোট মুনাফা (ইবিআইটিডিএ) ৩ গুণেরও বেশি বেড়ে পৌঁছেছে পাঁচ হাজার ৫৯ কোটি রুপিতে। এছাড়া মোট মুনাফা বৃদ্ধির ফলে এ সময়ে কর-পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৭৩৮ কোটি রুপি। আর্থিক এ পরিসংখ্যান কোম্পানির বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি স্থিতিস্থাপক ও কৌশলগত দক্ষতার প্রমাণ। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক বিবরণীতে ইনস্টলড ক্যাপাসিটির (বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা) উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরেও যার সক্ষমতা ছিল ১৩ হাজার ৬৫০ মেগাওয়াট, এক্ষেত্রে তা বেড়ে হয়েছে ১৫ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট। তিন মাসে এটি প্ল্যান্ট লোড ফ্যাক্টরে ৬৮.৬ শতাংশ অবদান রেখেছে, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ২৬.৫ শতাংশ বেশি। আদানি পাওয়ারের সমন্বিত বিদ্যুৎ বিক্রয়ের পরিমাণ গত এক বছরে ১১.৮ বিলিয়ন ইউনিট (বিইউ) থেকে ২১.৫ বিলিয়ন ইউনিটে (বিইউ) পৌঁছেছে। যা গত অর্থ বছরের তুলনায় বেড়েছে ৮২ শতাংশ। এর পেছনে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে উন্নত বিদ্যুতের চাহিদা এবং বৃহত্তর ইনস্টল সক্ষমতা। এ আর্থিক ফলাফলের অপারেটিং পারফরম্যান্সের মধ্যে এপিএল-এর সহযোগী আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেড (এপিজেএল) এর ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সম্পন্ন গোড্ডা আল্ট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট অন্তর্ভুক্ত। চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধে চালু হওয়া গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্টের ক্রমবর্ধমান অবদান ছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদনে মুন্দ্রা, উদুপি, রায়পুর ও মাহান প্ল্যান্টগুলো উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে, যা দ্রুতই বাংলাদেশের পাওয়ার সাপ্লাই ইকোসিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। এ আর্থিক পারফরম্যান্স আদানি পাওয়ারের শক্তিশালী রাজস্ব প্রবৃদ্ধিকে প্রতিফলিত করে। গত অর্থ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৭৭৩ কোটি রুপি যেখানে বর্তমানে একই সময়ে এর মোট রাজস্ব দেখানো হয়েছে ১৩ হাজার ৪০৫ কোটি রুপি। এদিকে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির মোট মুনাফা (ইবিআইটিডিএ) ছিল এক হাজার ৪৭৯ কোটি রুপি। আর চলতি অর্থ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে তা পাঁচ হাজার ৫৯ কোটি রুপিতে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে কর-পরবর্তী মুনাফার (পিএটি) ক্ষেত্রে। গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৯ কোটি রুপি, যা চলতি বছরের একই সময়ে বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৭৩৮ কোটি রুপি। এ প্রসঙ্গে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস বি খেয়ালিয়া বলেন, আদানি পাওয়ারের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন এটাই প্রমাণ করে যে, প্রতিষ্ঠানটি এ খাতে নিজের শীর্ষস্থানীয় অবস্থান ধরে রেখেছে। ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে সক্ষম আদানি পাওয়ার একটি শক্তিশালী লাভজনক ব্যবসা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। কেননা এ প্রতিষ্ঠানের রয়েছে কৌশলগতভাবে অবস্থিত পাওয়ার প্ল্যান্ট, পিপিএ (পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট) ও মার্চেন্ট সক্ষমতার মধ্যে দক্ষ বণ্টন, জ্বালানি ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ এবং পাওয়ার প্ল্যান্ট ওঅ্যান্ডএম (অপারেশন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) এ দক্ষতা। এর কারণে কোম্পানির তারল্য বেড়েছে, যা ঋণ কমাতে ব্যবহার করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মাহানে ১৬০০ মেগাওয়াট ব্রাউনফিল্ড সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং এভাবে আমরা নিজেদের নেতৃত্ব সম্প্রসারণের পথে এগিয়ে চলেছি। আমরা পরিবেশগত দিকটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের উৎপাদনশীল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করছি। এর মাধ্যমে শক্তিশালী জাতি গঠনের কার্যক্রমে অবদান রাখতে পেরে আমরা রোমাঞ্চিত। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনকে গুরুত্ব দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আদানি পাওয়ার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানের কৌশলগত উদ্যোগ ও সম্প্রসারণ সক্ষমতা ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখতে সহায়তা করছে। অপারেশনাল কার্যক্রমে অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রদর্শনের মাধ্যমে আসন্ন ত্রৈমাসিকেও উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের আশাবাদ রয়েছে আদানি পাওয়ারের।

Advertisement

আইএইচআর/জেএইচ/এএসএম