অর্থনীতি

পোশাক-কৃষিসহ ৪৩ খাতে পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমালো সরকার

তৈরি পোশাক, কৃষি, চামড়াসহ ৪৩টি খাতে পণ্য রপ্তা‌নি‌তে নগদ সহায়তা কমালো সরকার। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে খাত ভেদে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত সহায়তা কম পাবেন রপ্তানিকারকরা। এ নির্দেশনা চলতি জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হবে।

Advertisement

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে সরকার চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৪৩টি খাতে রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দিচ্ছে। যা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধি অনুসারে বিষয়টি রপ্তানি নির্ভর সাবসিডি হিসেবে বিবেচিত হয়।আর পড়ুন>> পণ্য রপ্তানিতে নতুন বাজার খুঁজতে বললেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

চুক্তি অনুযায়ী স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে রপ্তানিতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেওয়া যাবে না। আগামী ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে। তবে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা সম্পূর্ণভাবে একত্রে প্রত্যাহার করা হলে এ খাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন খাতে নগদ সহায়তার হার অল্প অল্প করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Advertisement

নতুন নির্দেশনা মতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত জাহাজি করা পণ্যের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৪৩টি খাতে রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। এখন দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে স‌র্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হারে এ নগদ সহায়তা পাবেন রপ্তা‌নিকারক। এর আগে যেটা ছিল ১ শতাংশ থেকে স‌র্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত।আরও পড়ুন>> কনটেইনার সংকট নেই, পরিবহন জটিলতায় বাড়ছে আমদানি-রপ্তানি খরচ

পোশাক খাতে ১ শতাংশের পরিবর্তে দশমিক ৫০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাবেন পোশাক রপ্তানিকারকরা। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে রপ্তানিকারকদের নগদ সহায়তা ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যে ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে এতদিন ভর্তুকি ১০ শতাংশ থাকলেও এখন থেকে পাবেন ৮ শতাংশ। অন্যান্য খাতেও রপ্তানিতে ভর্তুকি কমিয়েছে সরকার।

দেশীয় বস্ত্রখাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা ৩ শতাংশ করা হয়েছে। আগে যেটা ছিল ৪ শতাংশ। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্রখাতের প্রণোদনার হার ৩ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তাও ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। তবে, রপ্তানিকারকদের জন্য নীট, ওভেন ও সোয়েটারসহ তৈরি পোশাকখাতের সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অতিরিক্ত ৪ শতাংশ বহাল আছে। আর নতুন পণ্য বা নতুন বাজারে রপ্তানিতে ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। তৈরি পোশাকখাতে রপ্তানিতে বিশেষ নগদ সহায়তা ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন এ নির্দেশনার ফলে এসব খাতে নির্ধারিত পাঁচটি এইচএস কোডের রপ্তানির বিপরীতে কোনো নগদ সহায়তা মিলবে না।আরও পড়ুন>> বিশ্বমন্দার মধ্যেও রপ্তানি খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

এ বিষয়ে তৈরি পোশাকশিল্প উদ্যোক্তারা জানান, রপ্তানি সহায়তা কমানো হয়েছে। আবার কয়েকটি ক্যাটাগরির রপ্তানিতে পণ্য সহায়তা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে টি-শার্টসহ পোশাক রপ্তানির বড় পণ্যে সুবিধা থাকছে না। নতুন বাজারে সহায়তা কমানো হয়েছে। এতে আরও চাপ তৈরি করবে, বাধাগ্রস্ত হতে পারে দেশের অর্থনীতি।

Advertisement

ইএআর/এমএএইচ/