আন্তর্জাতিক

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ২৫৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণকে যে ভয়াবহ শাস্তি দেওয়া হচ্ছে তা কোনো কিছু দিয়েই বৈধতা দেওয়া যাবে না।

Advertisement

আরও পড়ুন: গাজায় ২ মাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলো ইসরায়েল

দক্ষিণ খান ইউনিসের চার বর্গ কিলোমিটার (১.৪ বর্গমাইল) এলাকা থেকে প্রায় ৯০ হাজার বাসিন্দা এবং ৪ লাখ ২৫ হাজার বাস্তুহারা লোকজনকে অন্যত্র সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এই বিপুল পরিমাণ বেসামরিক নাগরিক গাজার অন্য সব শহর থেকে খান ইউনিসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু গাজার কোনো স্থানই এখন আর নিরাপদ নয়। বিশেষ করে খান ইউনিসে এখন হামলা আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

Advertisement

এদিকে বেশ কিছু মেডিকেল সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, খান ইউনিসে আরও প্রায় কমপক্ষে ৪০ জন নিহত হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যকার সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ হাজার ৪৯০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৬৩ হাজারের বেশি মানুষ।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই প্রতিশোধ হিসেবে গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসকে নির্মূলের অজুহাতে নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা।

এদিকে গাজায় দুই মাসের জন্য যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। হামাসের হাতে বন্দি ১৩৬ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে এই বিরতি দেওয়া প্রস্তাব দিয়েছে তারা। কাতার ও মিশরের মাধ্যমে বিবেচনার জন্য এই প্রস্তাব হামাসের কাছে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, দুই মাসের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে নারী-শিশু, ৬০ বছরের বেশি বয়সী ও গুরুতর অসুস্থ জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে ইসরায়েল। তারপরের ধাপে সব নারী সেনা ও ৬০ বছরের চেয়ে কম বয়সী বেসামরিক পুরুষ, পুরুষ সেনা ও নিহত জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তর করতে হবে।

Advertisement

প্রস্তাবে ইসরায়েল আরও বলেছে, জিম্মি মুক্তি শুরুর আগে উভয়পক্ষের আলোচনায় নির্ধারণ করতে হবে যে জেরুজালেমের কারাগারে বন্দি কতজন ফিলিস্তিনিকে ওই যুদ্ধবিরতি চলাকালে মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর বাকি বন্দিদের বিষয়ে আলাদাভাবে আলোচনা করা হবে।

প্রস্তাবে ইসরায়েল স্পষ্ট করে বলেছে, তারা স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করবে না। তবে গাজার প্রধান শহরগুলো থেকে ইসরায়েলি সেনার সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে ও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের ধীরে ধীরে বসতবাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলের এক ভয়াবহ দিন, ২৪ সেনা নিহত

এর আগে ২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতি হয় গাজায়। ওই সাত দিনে মোট ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। বাকি ১৩২ জন এখনো তাদের কাছে রয়েছে। তবে ইসরায়েলি হামলায় জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ২৮ জন মারা গেছেন, যাদের মরদেহও হামাসের কাছে রয়েছে।

টিটিএন