দিগন্তজুড়ে ফুলে ভরা সরিষা মাঠ দেখে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক। প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। উপজেলার রাজিহার, বাকাল, গৈলা, রতনপুর ও বাগঘা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী ও বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের সমারোহ। লাভজনক হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে উপজেলায় বিভিন্ন অঞ্চলে সরিষার চাষ অনেকাংশেই বেড়েছে।
Advertisement
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিনা-৪, বারি-১৪, বারি-১৭, বারি-১৮ জাতের সরিষা আবাদ হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলায় ২ শতাধিক চাষিকে সরিষার বীজসহ ইউরিয়া, টিএসপি ও পটাশ সার দিয়েছে কৃষি অফিস।
সরেজমিনে জানা যায়, মাঠে মাঠে যেন হলুদের সমারোহ। সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে উপজেলার দিগন্ত জোড়া মাঠ। ক্ষেতে গুনগুন করছে মৌমাছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন এলাকার চাষিরা।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে বেড়েছে সরিষা চাষ, বাম্পার ফলনের আশা
Advertisement
রাজিহার ইউনিয়নের বড়বাশাইল গ্রামের কৃষক সুবাস মধু বলেন, ‘কম সময়ে কম খরচে অন্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষে বেশি মুনাফা থাকায় আগাম জাতের সরিষার চাষ করেছি। ৮০-১০০ দিনের মধ্যে সরিষার ফলন ঘরে তোলা যায়। এতে লাভের পরিমাণও ভালো। অনেকেই বিকল্প হিসেবে অন্য ফসলের পাশাপাশি সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।’
একই এলাকার কৃষক জুয়েল মৃধা বলেন, ‘সরিষা চাষে সার কম দিতে হয়। সেচ ও কীটনাশক তেমন লাগে না। একেবারেই খরচ কম ও অল্প সময়ে ফসল ঘরে তোলা যায়। বর্তমান বাজারে দামও ভালো।’
আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পীযুষ রায় জানান, চাষের শুরু থেকেই সরিষার রোগবালাই দমনে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে ফলনও ভালো হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় সরিষার ফলন ভালো হয়।’
আরও পড়ুন: সরিষা ক্ষেতে মৌবক্স, আহরণ হবে দেড়শ টন মধু
Advertisement
তিনি বলেন, ‘চলতি মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ সরিষা চাষ হয়েছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সার, বীজ ও কীটনাশকসহ আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষা চাষ থেকে কৃষকেরা বাড়তি মুনাফা আয় করতে পারবেন।’
শাওন খান/এসইউ/জেআইএম