ছুটি কাটানো থেকে শুরু করে দুঃসাহসিক কার্যকলাপের জন্য দুর্দান্ত এক স্থান হলো লাদাখ। হিমালয়ের কোলে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ৫৪২ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত প্রকৃতি দ্বারা বেষ্টিত এক স্থান হলো লাদাখ।
Advertisement
প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করেন লাদাখের সৌন্দর্য দেখতে। সেখানে আপনি প্রাসাদ, হ্রদ ও মঠ সহ অনেক বিস্ময়কর আকর্ষণ খুঁজে পাবেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বের কোথায় প্রথমে দিন হয় জানেন কি?
যারা ইতিহাস, অ্যাডভেঞ্চার ও প্রকৃতি ভালোবাসেন ও এসবের অন্বেষণ করেন তাদের জন্য লাদাখ হতে পারে সেরা গন্তব্য। যারা প্রথমবার লাদাখ ভ্রমণে যাবেন তারা ঘুরতে ভুলবেন না কয়েকটি জনপ্রিয় ৫ স্থান-
Advertisement
ম্যাগনেটিক হিল
লেহ থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে লেহ-কারগিল-বাল্টিক জাতীয় মহাসড়কে অবস্থিত। ম্যাগনেটিক হিল মূলত একটি মাধ্যাকর্ষণ পাহাড়, যা তার চৌম্বকীয় বৈশিষ্ট্যের জন্য বিখ্যাত।
এর চুম্বকত্ব এতটাই শক্তিশালী যে এখানে মহাকর্ষ বলের কারণে যানবাহন স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাহাড়ের দিকে চলে যায়। এই পাহাড়ের শক্তি অনুমান করতে পারে এর উপর দিয়ে যাওয়া প্লেনগুলো। অভিকর্ষের প্রভাব এড়াতে এই পাহাড়ের উপর দিয়ে বিমান চলাচল বেশ কঠিন।
আরও পড়ুন: ফ্লাওয়ার লেকে ছুটছেন দর্শনার্থীরা
Advertisement
পাহাড়টি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। যদিও বলা হয়, এটি একটি অপটিক্যাল ইলিউশন, তবে এটি নতুন কিছু অনুভব করার সেরা জায়গা।
লেহ প্রাসাদ
সেমো পাহাড়ের চূড়ায় ১৫৫৩ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত লেহ প্রাসাদটি লেহের প্রাক্তন রাজপরিবারের বাসভবন। প্রাসাদটি লাসার পোতালা প্রাসাদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
এটি আকারে কিছুটা ছোট, যা পাথর, বালি, কাঠ ও মাটি দিয়ে তৈরি। লেহ প্যালেস লাচেন পালকার নামেও পরিচিত। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আপনি এই প্রাসাদ ঘুরতে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন: নতুন বছরে ঘুরে আসতে পারেন এই ৫ দেশে
৯ তলাবিশিষ্ট এই প্রাসাদে এখন রাজকীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি একটি জাদুঘরও আছে। প্রাসাদটি এখন কিছুটা ধ্বংসস্তূপে, তবে বাইরে থেকে দৃশ্যটি আশ্চর্যজনক।
এই কাঠামো এখন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) দ্বারা পরিচালিত হয়। প্রাসাদটি ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ডোগরা বাহিনীর দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়। পরে রাজ পরিবার দুর্গ ছেড়ে স্টোক প্যালেসে চলে আসে।
চাদর ট্রেক
এটি লাদাখ অঞ্চলের অন্যতম বিখ্যাত পর্যটন আকর্ষণ। বিশেষ করে শীতে এই স্থানে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যায়। এর কারণ জান্সকার নদী। শীতে বরফে পরিণত হয় এই নদী। ফলে পর্যটকরা হিমায়িত নদীর উপর দিয়ে হেঁটে যেতে পারেন সহজেই।
আরও পড়ুন: একদিনের ট্যুরে ঘুরে আসতে পারেন নীলাদ্রি লেকে
একটি বিখ্যাত শীতকালীন ট্র্যাক, যা শুরু হয় চিলিং থেকে। সেখান থেকেই মূলত নদী জমতে শুরু করে। আপনি ট্রেকিং করার সময় জান্সকার নদীতে হাঁটার রোমাঞ্চ অনুভব করতে পারেন।
পর্যটকরা ট্র্যাকিং করার পাশাপাশি বিশ্রামের জন্য নদীপাড়ের কোনো স্থানে ক্যাম্প করেন। যেখান থেকে তারা উপত্যকার মন্ত্রমুগ্ধ ও অস্পৃশ্য সৌন্দর্য উপভোগ করেন। এছাড়া সেখান থেকে আপনি বরফে ঢাকা পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখেও মুগ্ধ হবেন।
খারদুং লা পাস
খারদুং লা ‘নুব্রা ও শ্যাওক উপত্যকার প্রবেশদ্বার’ নামেও পরিচিত। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫ হাজার ৩৫৯ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত বিশ্বের সর্বোচ্চ মোটরযানযোগ্য রাস্তাগুলোর মধ্যে একটি।
লাদাখে দেখার মতো ১২টি সেরা জায়গাগুলোর মধ্যে একটি হলো এই খারদুং লা পাস। এটি লেহ থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
‘লোয়ার ক্যাসেল পাস’ নামেও পরিচিত এটি। ১৯৮৮ সালে যানবাহনের জন্য উন্মুক্ত করা হয় স্থানটি। মোটরবাইক চালকদের জন্য সেরা এক রাস্তা এটি।
এখানে আপনি আর্মি ক্যান্টিনে চা-পানিও উপভোগ করতে পারবেন। জায়গাটি সিয়াচেনে সেনাবাহিনীর সরবরাহ পাঠানোর জন্যও পরিচিত।
আরও পড়ুন: কলকাতার যেসব স্থানে ঢুঁ মারতে ভুলবেন না
স্টোক প্যালেস
লেহ থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, স্টোক প্যালেস হলো লাদাখের রাজপরিবার ও রাজা সেঙ্গে নামগ্যালের বংশধরদের গ্রীষ্মকালীন আবাস। এটি ১৮২০ সালে রাজা টিস্যাপাল নামগায়েল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
১৯৮০ সালে দালাই লামা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেছিলেন। বর্তমানে স্টোক প্যালেস একটি ঐতিহ্যবাহী হোটেলে রূপান্তরিত হয়েছে।
স্টোক প্যালেসে জাদুঘর ও মন্দির আছে। সেখানে গেলে আপনি দেখবেন রাজকীয় সব আসবাবপত্র। স্টোক প্যালেসের হোটেলটি ৬ ইউনিটে বিভক্ত ও চুল্লি বাগ ভিলায় আরও তিনটি বিভাগে বিভক্ত।
সূত্র: প্রেসওয়্যার ১৮
জেএমএস/জেআইএম