দেশজুড়ে

লাইনে দাঁড়িয়ে রোগীরা, খোঁজ নেই ডাক্তারের

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারির পরও চাঁদপুরে সরকারি জেনারেল হাসপাতালে কমছে না অনিয়ম। রোগীদের রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। অধিকাংশ কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সঠিক সময়ে আসছেন না কর্মস্থলে।

Advertisement

সোমবার (২২ জানুয়ারি) হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।

সরেজমিনে বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় তলার ২০৮, ২১০, ২১১ ও ২১৬ নম্বরসহ বেশ কয়েকটি কক্ষের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। বিভিন্ন বয়সের প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন ডাক্তারের অপেক্ষায়। কোনো ডাক্তারের রুমের দরজা খোলা, আবার কোনোটি তালাবদ্ধ। ডাক্তারের খোঁজে এদিক ওদিক ছুটছেন রোগীরা। কেউ অপেক্ষা করে ডাক্তারের দেখা পাচ্ছেন, আবার অনেক রোগী ডাক্তার দেখানো ছাড়াই বাড়ি ফিরেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালে রোগী দেখা শুরু করার কথা। কিন্তু কয়েকজন ডাক্তার আসেন সাড়ে সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার সময়। আবার অনেক ডাক্তার ১২টা বাজলেই চলে যান ব্যক্তিগত চেম্বার কিংবা প্রাইভেট ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে। কোনো প্রকার জবাবদিহিতা না থাকায় তাদের কাছে অনিয়ম এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন ভুক্তভোগী রোগীরা। ডাক্তার না পেয়ে চিকিৎসা না নিয়েই প্রতিদিন শহর এবং গ্রাম থেকে আসা অনেক রোগীকে চলে যেতে হচ্ছে।

Advertisement

চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন থেকে আসা হাফসা বেগম জাগো নিউজকে জানান, সকাল ৯টায় টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এখন ১১টা বাজে। এখনো ডাক্তার দেখাতে পারিনি। আগে এক কক্ষ থেকে ফেরত এসেছি। সেখানে নাকি ডাক্তার নাই। তাই নতুন লাইনে এসেছি।

শহরের বিষ্ণুদী এলাকা থেকে আসা আফরোজা জানান, ডাক্তাররা নিজেদের খুশিমত চলে। যখন ইচ্ছে আসেন, আবার যখন খুশি চলে। এক ঘণ্টা বসে আছি। এখানকার লোকজন বললো ডাক্তার নাকি ওয়ার্ডে রোগী দেখছে।

সুজন চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা বলেন, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে যে পরিমাণ চিকিৎসক প্রয়োজন, এখনও সে পরিমাণ চিকিৎসক নেই। এটি দুঃখজনক। একই সঙ্গে যে সকল চিকিৎসক আছেন, তারাও সময়মত আসেন না। এতে করে রোগীদের সমস্যায় পড়তে হয়। পর্যাপ্ত লোকবল ও চিকিৎসকদের রোগী দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। রোগীদের সেবা নিশ্চিত করাই সবার দাবি।

চাঁদপুর ২৫০ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, হাসপাতালে মঞ্জুরীকৃত পদের সংখ্যা ৫১। এর মধ্যে পূরণকৃত পদ ২৮ ও শূন্যপদ রয়েছে ২৩টি। শূন্যপদ পূরণ হলে সেবার মান আরও বাড়বে। যে চিকিৎসক অনিয়ম করেন তাদেরকে মিটিংয়ে সতর্ক করা হয়েছে। ফের অভিযোগ আসলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

শরীফুল ইসলাম/এনআইবি/জিকেএস