আাগামীকাল (রোববার) থেকে রাজধানীর উপকণ্ঠ পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) শুরু হচ্ছে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এবারের বাণিজ্যমেলায় বড় পরিসরে অংশ নিচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। এরই মধ্যে দৃষ্টিনন্দন ও হরেক রকমের পণ্যে সাজানো হয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের স্টলগুলো।
Advertisement
আকর্ষণীয় পণ্য ও দাম হাতের নাগালে থাকায় বাণিজ্যমেলায় প্রাণ-আরএফএলের প্যাভিলিয়নে অতীতের মতো এবারও ক্রেতা-দর্শনার্থীর ব্যাপক উপস্থিতি আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) সরেজমিনে মেলার প্রাঙ্গণে দেখা গেছে, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের স্টলগুলোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ। কিছু স্টলে এরই মধ্যে পণ্য সাজানো হয়েছে। আকর্ষণীয় রং ও ডিজাইনের হওয়ায় স্টলগুলো নজর কাড়ছে অনেকের।
স্টলগুলোর মধ্যে রয়েছে: আরএফএল, টেস্টি ট্রিট, মিঠাই, প্রাণ-ঝটপট, বিস্কুট বেকারি, প্রাণ মিস্টার নুডলস, প্রাণ কফি হাউস, ট্রিট চকলেট, উইনার ফ্যাশন, রিগ্যাল, কমফি ও অল-টাইম।
Advertisement
আরএফএলের (রিটেইল চেইন) প্রধান বিপণন কর্মকর্তা শফিক শাহীন জাগো নিউজকে বলেন, এবার আমরা মাঠটা (স্টল বরাদ্দের জায়গা) একটু দেরিতে বুঝে পেয়েছি। চেষ্টা করছি সময়মতো শেষ করার। এখানে ১৬ হাজার স্কয়ার ফিটের একটি বড় প্যাভিলিয়ন আমাদের। এত বড় জায়গায় প্যাভিলিয়ন করতে সময় লেগে যাচ্ছে, প্রায় ২০০ শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করছেন। এখন শেষ সময়ের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। আগামীকাল যেহেতু উদ্বোধন তার আগেই শেষ করার চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন>> বাণিজ্যমেলা শুরু ২১ জানুয়ারি
তিনি বলেন, এত বড় একটি প্যাভিলিয়ন করার উদ্দেশ্য আমরা আরএফএল এ-টু-জেড প্রোডাক্ট সেল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ক্রেতাদের জানাতে চাই আমাদের কি কি পণ্য আছে। আমাদের প্লাস্টিক থেকে শুরু করে ফার্নিচার, ইলেকট্রনিকসসহ অনেক পণ্য আছে। আমাদের আরও একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিবছরই অনেক নতুন পণ্য ও ব্র্যান্ড আমরা নিয়ে আসছি, যেগুলো ক্রেতাদের জানাতে চাই।
স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের স্বনামধন্য ব্র্যান্ড প্রাণ মিস্টার নুডলস স্টলের দায়িত্বে থাকা জাহাঙ্গীর আলম তুহিন বলেন, আমরা বাণিজ্যমেলায় প্রাণ মিস্টার নুডলসের স্টল নিয়েছি, গতবারও ছিল। নুডলসের মান ভালো হওয়ায় এবারও স্টলটি নিয়ে এসেছি। সাধারণ মানুষের হাতে হাতে যেন প্রাণ মিস্টার নুডলস পৌঁছে দিতে পারি। গতবার অনেক সাড়া পেয়েছিলাম। আমাদের স্টলের কাজ মোটামুটি শেষ। প্রোডাক্ট আজ ডিসপ্লে হয়ে যাবে। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর পুরোদমে চালু করতে পারবো আশা করছি।
Advertisement
টেস্টি ট্রিট স্টলের দায়িত্ব থাকা শরিফ বলেন, গতবছরও আমাদের স্টল ছিল। ছোট পরিসরে ছিলাম। এবার বড় পরিসরে স্টল করেছি। আশা করছি, এ বছর আমরা অনেক ভালো ব্যবসা করবো। আমাদের প্রস্তুতি ৯০ শতাংশ সম্পন্ন। আশা করছি বাকি কাজও মেলা উদ্বোধনের আগেই শেষ করতে পারবো।
প্রাণের জনপ্রিয় মিষ্টির ব্র্যান্ড ‘মিঠাই’ এর অপারেশন ম্যানেজার রনি আহমেদ বলেন, স্টলের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পরই আমরা স্টল চালু করতে পারবো। মূলত মিঠাইকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এবং আমাদের প্রোডাক্টে প্রিমিয়াম লুকটা মানুষকে দেখাতে এ স্টল।
পূর্বাচলের বিবিসিএফইসি হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৮তম আসর। আগামীকাল ২১ জানুয়ারি মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইপিবি জানিয়েছে, এবারের বাণিজ্যমেলায় দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ অংশ নেবে। পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রপ্তানির বড় বাজার খোঁজার লক্ষ্য রয়েছে।
জানা গেছে, দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ সামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর, ফার্নিচার ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে।
দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ মেলা হতো শেরেবাংলা নগরে। কোভিড মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এরপর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলার আয়োজন করা হয় পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে। এবার তৃতীয়বারের মতো স্থায়ী ভেন্যু বাংলাদেশ-চীন এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চীনের অর্থায়নে পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি বছর এখানেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আসর বসবে।
আইএইচআর/এমএএইচ/এমএস