ছত্রাক বা ফাঙ্গাল সংক্রমণকে কখনো হালকাভাবে নেওয়া ঠিক নয়। এক্ষেত্রে একটি ছোট্ট ফোঁড়া থেকে নখের পাশে সংক্রমণ ঘটতে পারে।
Advertisement
চলতি বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা বিশ্বে ৩৮ লাখ মানুষের মৃত্যুর পিছনে দায়ী এই সংক্রমণ। অর্থাৎ লাখ লাখ মানুষের ক্ষেত্রে প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ছত্রাক সংক্রমণ। তাই সাবধান হওয়ার বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: একটানা কাশি হচ্ছে, সাধারণ ঠান্ডা নাকি অন্য কোনো কারণ?
ছত্রাক সংক্রমণ কতটা মারাত্মক?
Advertisement
শরীরের একটা ছোট্ট ফোঁড়া বা কালো তিলের দানার মতো ঘা-ও ডেকে আনতে পারে মৃত্যু। এমনটিই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এমনকি গবেষণাও পাওয়া গেছে একই ধরনের তথ্য।
সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, হঠাৎ করেই বিশ্বে দ্বিগুণ বেড়েছে ছত্রাক সংক্রমণের ঘটনা। প্রতিবছর গোটা বিশ্বে মোট মৃত্যুর ৬.৮ শতাংশের পেছনের কারণ হলো এই ছত্রাক সংক্রমণ।
গবেষকদের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ক্যানডিডা ফাঙ্গাল ইনফেকশনই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। প্রতিবছর অন্তত ১৫ লাখ মানুষ ক্যানডিডা ইনফেকশনে আক্রান্ত হন।
আরও পড়ুন: পর্যাপ্ত ঘুমিয়েও ক্লান্তি লাগছে, কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?
Advertisement
এছাড়া শরীরে এ ধরনের সংক্রমণ দেখা দিলে তা নির্ণয় করাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ক্যাডডিডার মাত্র ৪০ শতাংশ কেস ধরা পড়ে ব্লাড টেস্টে। এদিকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে ক্যানডিডা সংক্রমণের স্থানে সেপসিসের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
কীভাবে হয় ক্যাডডিডা সংক্রমণ?
বিজ্ঞানীদের মতে, প্রত্যেক মানুষের শরীরেই নাকি অল্প পরিমাণে উপস্থিত থাকে এই ছত্রাকের। ক্যানডিডার মতো শরীরেই মেলে ইস্টও। সাধারণত মুখ, স্কিন ও ইনটেস্টাইনের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে এই ছত্রাক।
আর কোনো কারণে যদি ক্যানডিডার সংখ্যা আচমকা বেড়ে যায়, তাহলেই বিপদ ঘটবে অর্থাৎ তখনই দেখা দেয় সংক্রমণ। এ সময় শরীরে কমে যায় সংক্রমণ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ায় সংখ্যা। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: শীতে পানিশূন্যতায় ভুগছেন কি না বুঝে নিন ৯ লক্ষণে
ফলে শরীরে বাড়তে থাকে ক্যানডিডার সংক্রমণ। মুখ, জিভ, গলা, কাঁধ, যৌনাঙ্গ যে কোনো জায়গায় থাবা বসাতে পারে এই সংক্রমণ। বাড়াবাড়ি রকম পর্যায়ে পৌঁছালে রক্তের মাধ্যমে হাড়ের পাশাপাশি মস্তিষ্ক ও হার্টেও ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ।
কোন লক্ষণ দেখে সাবধান হবেন?
সংক্রমণের স্থানে প্রথমে সাংঘাতিক চুলকায়। পরে লাল হয়ে ফুলে ওঠে। কখনো কখনো ফুসকুড়ি বা ফোস্কার মতোও হয়। এমনকি সাংঘাতিক জ্বালাপোড়া ভাব হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে তৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কাদের জন্য ক্যানডিডা মারাত্মক? কোথায় হয় সংক্রমণ?
শরীরেই বাড়বাড়ন্ত হয় ক্যানডিডার। মুখ, জিভ, গলা, কাঁধ, যৌনাঙ্গ যেকোনও জায়গায় থাবা বসাতে পারে এই সংক্রমণ। বাড়াবাড়ি রকম পর্যায়ে পৌঁছলে রক্তের মাধ্যমে হাড়ের পাশাপাশি মস্তিষ্ক এবং হার্টেও ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ।
আরও পড়ুন: ঠান্ডায় শরীর গরম রাখবে যে খাবার
কাদের জন্য মারণ রূপ ধরে ক্যানডিডা?
ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগীদের জন্য এই সংক্রমণ মারাত্মক বিপদের। একবার হলে সারতে চায় না, এমনকি বাড়াবাড়ি হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এছাড়া সদ্যোজাত শিশু, বাচ্চা ও বয়স্কদের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এমনকি অপারেশনের আগে ক্যাথিটার ব্যবহার করা হলেও শরীরে ক্যানডিডা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সূত্র: ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক
জেএমএস/এমএস