শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন সংশোধন, নিপীড়ন ও হয়রানিমুক্ত নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
Advertisement
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাঈফুজ্জামান বাদশা এবং জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশের মানুষ লড়াই করে আসছে শোষণ ও অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষা নিয়ে। কিন্তু আজও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ প্রচণ্ড বৈষম্যের শিকার। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুবিধাভোগী গুটি কয়েক মানুষ রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণ করেন। সেজন্য স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও শ্রমিকদের যে মজুরি নির্ধারিত হয়, তা তাদের জীবনের প্রয়োজনের বিবেচনায় নয়, মালিকদের ইচ্ছা অনুসারে। শ্রম আইন প্রণয়ন করা হয় শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নয়, বরং শ্রমিকদের আইনের ফাঁদে বেঁধে মালিকদের শোষণকে নির্বিঘ্ন করার জন্য।
নেতারা আরও বলেন, সরকার আইএলও এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও চর্চা প্রক্রিয়া সহজিকরণসহ শ্রম পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য শ্রম আইন সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি পালনের উদ্যোগ দেখানোর জন্য ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর শ্রম আইনের সংশোধনী পাস করা হয়। যা রাষ্ট্রপতি সই না করে ২০ নভেম্বর সংসদে ফেরত পাঠান। শ্রম আইনের এই সংশোধনীতে শ্রমিকদের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি। তাই শ্রম আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী যা পূর্বের সংসদে পাস হয়েছিল তা সম্পূর্ণ বাতিল করে শ্রমিক সংগঠনসমূহের উত্থাপিত দাবিকে অগ্রাধিকার দিয়ে শ্রম আইনকে সংশোধন করতে হবে।
Advertisement
বাসদের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিক ফ্রন্টের উপদেষ্টা কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, সরকার কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি। দেশের মানবসম্পদের ব্যবস্থাপক হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় হওয়ার কথা রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। অথচ রাষ্ট্রের সবচেয়ে অবহেলিত মন্ত্রণালয় হিসেবে গণ্য হয় এটি। তারপর রয়েছে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরসমূহের দুর্নীতি, যা মজুরির জন্য এসে মৃত্যুর মিছিল থামাতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই শ্রম আইনের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত ধারা আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুসারে এবং আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর করে সেই আলোকে আইন সংশোধন করে, নির্যাতন, হয়রানিমুক্ত, নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করতে হবে।
আরএএস/জেডএইচ/