বিলজুড়ে দেখা মেলে নানা রঙের পাখি। শোনা যায় কিচিরমিচির। দেখে সব কয়টির নাম বলা একটু কঠিন। বিলের স্বচ্ছ জলের ওপর দিয়ে ডানা ঝাপটে উড়ে বেড়াচ্ছে তারা। বগুড়ার গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের ফসলের মাঠের বুকে বুরুঙ্গি বিলে দেখা যাচ্ছে এমন দৃশ্য।
Advertisement
ঋতুবৈচিত্র্যে বাংলায় এখন মাঘ মাস। তবে প্রকৃতিতে হেমন্ত থেকেই বইতে শুরু করেছে শীতের হাওয়া। আর সে সময় হতেই দেশের জলাশয়গুলোয় ভিড় করতে শুরু করেছে দূর দেশের পাখিরা। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে তারা। অন্য বিলের মতোই বুরুঙ্গি বিলেও ভিড় করেছে হাজারও পরিযায়ী পাখি।
নরওয়ে, সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান দেশ থেকে উষ্ণতার খোঁজে এসে জড়ো হয়েছে এখানে। বর্তমানে বুরুঙ্গি বিল যেন পাখিদের অভয়ারণ্য। ছোট্ট বুরুঙ্গি বিলে দেখা যায়, চারপাশে সবুজ কচুরিপানা। তার মাঝেই টলমল করছে স্বচ্ছ পানি। বিলের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে পাখির দল।
এখানে পাতিসরালি, শামুকখোল, হট্টিটি, গেওয়া বাটান, সিট্রিন খঞ্জন, বড় বগা, কানি বক, লালচে বক, পাতি শিলাফিদ্দা, ছোট পানকৌড়ি, পাতি মাছরাঙা, ধলাবুক মাছরাঙা, জলময়ূর, সবুজ বাঁশপাতিসহ বিভিন্ন ধরনের পাখিতে মুখরিত ছোট্ট এই বিল।
Advertisement
সচেতন নাগরিক আর আইনের নজরদারিতে বিল এলাকায় পাখি শিকার অনেকটাই বন্ধ বলা চলে। ফলে পাখিরা নির্বিঘ্নে উপভোগ করছে তাদের সেরা সময়। পাখির কলকাকলি দেখতে প্রতিদিন বিলের চারপাশে ভিড় জমাচ্ছে ভ্রমণপিপাসু মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, রং-বেরঙের নাম না জানা সুন্দর পাখিগুলো ডানা ঝাপটে বিলের বুকে ঘুরে বেড়ায়। কোনো কোনো পাখির ওৎ পেতে মাছ ধরার দৃশ্য এতটাই নয়নাভিরাম হয় যে, অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগেই পাখির গায়ে ঢিল মারা বা ধরতে বারণ করেন। কেননা শামুকখোলের কচুরিপানার মাঝে খাবার খোঁজার দৃশ্য কিংবা কানি বকের মাছ ধরার দৃশ্য বিলের পাড় থেকেই অপরূপ লাগে।
রাজধানী থেকে বেড়াতে আসা সিয়াম মাহমুদ বলেন, ‘বগুড়ায় এসেছি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে। স্থানীয়দের থেকে শুনলাম, এখানে একটি মনমুগ্ধকর পাখিদের বিল রয়েছে। তাই বুরুঙ্গি বিলে এসেছি পরিবার নিয়ে। সত্যি বলতে এত পাখি একসঙ্গে এর আগে দেখিনি।’
এসইউ/এএসএম
Advertisement