আন্তর্জাতিক

নিম্নকক্ষে বিল পাস হলেও অনিশ্চয়তা কাটেনি সুনাকের

যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর প্রকল্পটি সর্বোচ্চ আদালত খারিজ করে দিলেও দমে যাননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। আশ্রয়প্রার্থীদের আফ্রিকার দেশটিতে পাঠাতে নতুন বিল নিয়ে পার্লামেন্টে গেছেন তিনি। নিজ দলের রক্ষণশীল আইনপ্রণেতাদেরও বাধার মুখে পড়েও শেষ পর্যন্ত হাউস অব কমনসে পাস হয়েছে বিলটি। কিন্তু তাতেও অনিশ্চয়তা কাটেনি। সুনাক সরকারের বিতর্কিত প্রকল্পটিকে আলোর মুখ দেখাতে হলে আরও কিছু বাধা কাটাতে হবে।

Advertisement

ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিতর্কের পর যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ, অর্থাৎ হাউস অব কমনসে পাস হয়েছে ‘সেফটি অব রুয়ান্ডা বিল’। সরকারের আনা এই বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ৩২০টি, বিপক্ষে ২৭৬টি।

বিলটির মূল উদ্দেশ্য হলো, ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে সরকারের নীতি বাস্তবায়ন করা। কারণ, দেশটির সর্বোচ্চ আদালত গত নভেম্বরে আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর নীতিকে বেআইনি ঘোষণা করেছিলেন।

বিলটি এখন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। কিন্তু সেখানে সুনাকের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কোনো বিষয় নেই। উচ্চকক্ষ বিলটির বিরোধিতাও করতে পারে। কারণ সমালোচকেরা বলছেন, এই বিল পাস হলে যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে।

Advertisement

এ অবস্থায় বিলটি সংশোধনের চেষ্টা করতে পারে লর্ডস। এর মানে হলো, পার্লামেন্টের দুই কক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসা। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে এটি ‘পিং পং’ নামে পরিচিত।

সাধারণত, উচ্চকক্ষের সহকর্মীরা নিম্নকক্ষের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ইচ্ছার বিপক্ষে দাঁড়ান না। ‘স্যালিসবারি ডকট্রিন’ অনুসারে, সরকারি দলের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করা কোনো পদক্ষেপের বিপক্ষে অবস্থান নিতে চায় না উচ্চকক্ষ।

কিন্তু রুয়ান্ডা প্রকল্পটি রক্ষণশীলদের ২০১৯ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ফলে বিলটি পাসের ক্ষেত্রে বিরোধিতা করতে বা আপত্তি জানাতে কোনো বাধা নেই উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিদের।

এমন পরিস্থিতিতে আইনটি এক বছর পিছিয়ে যেতে পারে। যার অর্থ- পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এটি পাস করার আর সুযোগ থাকবে না সুনাক সরকারের হাতে।

Advertisement

হাউস অব লর্ডসের একটি কমিটি আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো যাচাই করে জানিয়েছে, ব্রিটিশ সরকার এবং রুয়ান্ডার চুক্তিটি অনুমোদন দেওয়া উচিত নয়।

কমিটি জানিয়েছে, আশ্রয়প্রার্থীদের যদি নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়, সেখানে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এছাড়া, চুক্তিটিতে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য যথাযথ সুরক্ষার অভাব রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।

সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টসকেএএ/