ভারতের মতো দেশে শূন্য কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্য অর্জন করতে গ্রিন হাইড্রোজেনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি।
Advertisement
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ৫৪তম বার্ষিক সভায় লেখা একটি ব্লগে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ব্যয় হ্রাস: শূন্য কার্বন নিঃসরণের পথে গ্রিন হাইড্রোজেনকে কাজ লাগানোর চাবিকাঠি’ শীর্ষক এ ব্লগে আদানি জীবাশ্ম জ্বালানির মূল বিকল্প হিসেবে গ্রিন হাইড্রোজেনের কার্যকারিতা ও সম্ভাবনার প্রতি আলোকপাত করেছেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, বিশ্ব একটি পরিচ্ছন্ন ও নবায়নযোগ্য ভবিষ্যতের দিকে রূপান্তর করতে চায়।
ডব্লিউইএফ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ ব্লগে পরিবেশের পাশাপাশি ভারতের উন্নয়নের জন্য গ্রিন হাইড্রোজেনের উপকারিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এতে শূন্য কার্বন নিঃসরণ করা একটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হিসেবে গ্রিন হাইড্রোজেনের কার্যকারিতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সারা বিশ্বে কার্বন নিরপেক্ষতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের চাবিকাঠি হিসেবে গ্রিন হাইড্রোজেন নিজের অবস্থান ধরে রাখবে বলে মন্তব্য করেন গৌতম আদানি। হাইড্রোজেন একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। এটি একমাত্র বর্জ্য পণ্য হিসেবে পানির মাধ্যমে জ্বালানি কোষে (ফুয়েল সেল) বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে বলেও জানান তিনি।
গ্রিন হাইড্রোজেনের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে, বৃহৎ পরিসরে এর উৎপাদন ব্যয় কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন গৌতম আদানি। পাশাপাশি বিভিন্ন নীতিগত সমর্থন ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গ্রিন হাইড্রোজেনকে সাশ্রয়ী করতে সমগ্র সাপ্লাই চেইনকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি ভার্টিক্যাল ইন্টিগ্রেশন পদ্ধতি অবলম্বনের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি। যাতে গ্রিন হাইড্রোজেনকে সহজলভ্য করা সম্ভব হয়।
Advertisement
এক্ষেত্রে ব্যাকওয়ার্ড ইন্টিগ্রেশন পদ্ধতি মেনে চলা প্রতিষ্ঠানগুলোই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা বিশ্বকে সাশ্রয়ী মূল্যের গ্রিন মলিকিউলস্ সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। গ্রিন হাইড্রোজেনের উৎপাদনে বর্তমানে প্রতি কিলোগ্রামে (কেজি) ৩ থেকে ৫ মার্কিন ডলার খরচ হয়। বিস্তৃত পরিসরে এটিকে গ্রহণের জন্য উৎপাদন ব্যয় কেজি প্রতি ১ মার্কিন ডলারে কমিয়ে আনার পরামর্শ দেন আদানি গ্রুপের চেয়ারমান।
গ্রিন হাইড্রোজেনকে একটি যোগ্য সমাধান হিসেবে তুলে ধরে আদানি তার ব্লগে জানান, ‘একটি জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়ে আরেকটি জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতিস্থাপন করে নয়, বরং ভারতের জন্য নবায়নযোগ্য ও গ্রিন হাইড্রোজেনের ব্যবহারই হলো একটি ন্যায়সঙ্গত সমাধান। গ্রিন হাইড্রোজেন সৌর ব্যয় হ্রাসের বিকল্প হতে পারে। এই পরিবর্তন ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জন এবং শহরগুলোর বায়ুর গুণগত মান উন্নত করতে সহায়তা করবে। এটি আমদানি করা অ্যামোনিয়া যা সারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, এর দামের অনিশ্চয়তা দূর করে খাদ্য নিরাপত্তায়ও অবদান রাখবে। সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো, এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এড়াতে বিশ্বের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করবে।’
শিল্প প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, নীতি নির্ধারক ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগীদের জন্য ব্লগে একটি রোডম্যাপের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে। জ্বালানি খাতে সৃষ্ট অসুবিধা ও সম্ভাবনাগুলো কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য এ রোডম্যাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আগামী দিনের জ্বালানি খাতের আমূল পরিবর্তনে গ্রিন হাইড্রোজেন কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে, সে সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে, আগ্রহী পাঠকরা গৌতম আদানির প্রকাশিত ব্লগটি পড়ে দেখতে পারেন।
আইএইচআর/জেএইচ/জেআইএম
Advertisement