ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের বিপর্যস্ত উত্তরের জেলা নওগাঁ। সূর্যের দেখা না মেলায় দিনে ও রাতে সমানতালে কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে।
Advertisement
তীব্র শীতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। কষ্ট করে কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ মিলছে না। আর শীতের মধ্যে রাস্তায় লোকজন কম বের হওয়ায় রিকশাচালকদের রোজগারও একেবারে কমে গেছে।
এদিকে তীব্র ঠান্ডায় বেড়েছে শীতজনিত রোগ। রোগীদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি। বাড়তি রোগীর চাপে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলায় গত এক সপ্তাহ ধরেই তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে বা তার নিচে অবস্থান করছে। আর জেলায় শেষ সূর্যের দেখা মিলেছিল গত শনিবার।
Advertisement
শহরের রুবির মোড় এলাকায় কথা হয় অটোরিকশাচালক রহিদুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ ঘন কুয়াশার মধ্যেও পেটের দায়ে বের হয়েছি। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত ভাড়াই হয়নি। আগে যা ইনকাম করতাম এখন তা অর্ধেকে নেমেছে।
আরজি নওগাঁ এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে তাজের মোড়ে এসেছেন দিনমজুর মানিক মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কাজ না করলে তো আমাদের দিন চলে না। কিন্তু এমন শীত পড়েছে যে লোকজন ঘর থেকেই বের হচ্ছে না। কাজের লোকের খোঁজ করবে কে? তাই বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছি।
মঙ্গলবার নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোগীর চাপ বেড়েছে। হাসপাতালে আসা রোগীদের অধিকাংশই শীতজনিত রোগে ভুগছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের হারই বেশি।
শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স জবা রানী বলেন, গত কয়েকদিনে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুদের অধিকাংশই সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত।
Advertisement
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, প্রতিদিনই শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগীর চাপ সামাল দিতে চিকিৎসক ও নার্সরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বয়স্ক ও শিশুদের যাতে ঠান্ডা না লাগে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। হাত-পায়ে মোজা পরাতে হবে। রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মিলছে না। এর সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় প্রচণ্ড শীত অনুভূত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী দুই-একদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টির পর মেঘ কেটে গেলে সূর্যের দেখা মিলবে। এরপর শীত কিছুটা কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
মশিউর রহমান/আরএইচ/এএসএম