গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে লোহিত সাগর দিয়ে চলাচলকারী জাহাজে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এ কারণে বিশ্ব বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এই রুট দিয়ে জাহাজ চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে রপ্তানি খরচ বেড়ে গেছে বেশিরভাগ দেশের। যেমন- ভারত থেকে ইউরোপে পণ্য রপ্তানির খরচ একলাফে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
Advertisement
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ইউরোপে ভারতের পণ্য রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ বা প্রতি মাসে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য যেতো লোহিত সাগর দিয়ে। কিন্তু হুথি আক্রমণের জেরে এই পথ বাদ দিয়ে ভারতকে এখন পুরো আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে পণ্য পাঠাতে হচ্ছে ইউরোপ ও আমেরিকায়।
এর ফলে যাত্রাপথের দূরত্ব বেড়ে গেছে চার হাজার থেকে ছয় হাজার নটিক্যাল মাইল এবং সময় বেড়েছে অন্তত ১৪ থেকে ২০ দিন।
মারস্ক, এমএসসি, হ্যাপাগ লয়েডের মতো প্রধান শিপিং কোম্পানিগুলো লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বা সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে।
Advertisement
ভারতের একটি রপ্তানি সমিতির প্রধানসহ চার রপ্তানিকারক বলেছেন, গত নভেম্বরে লোহিত সাগরে হুথিদের আক্রমণ শুরুর আগে ভারত থেকে ইউরোপ, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে একটি ২৪ ফুটের শিপিং কন্টেইনার পাঠাতে খরচ হতো ৬০০ ডলারের মতো। কিন্তু এখন লাগছে অন্তত ১ হাজার ৫০০ ডলার।
ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার (ইইপিসি) চেয়ারম্যান অরুণ কুমার গারোদিয়া বলেন, শিপিং খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমাদের আর লাভ হচ্ছে না। বেশিরভাগ ক্রেতাই দাম সংশোধন করতে রাজি নন।
তিনি জানান, ক্রমবর্ধমান শিপিং ব্যয় এবং অর্ডার সরবরাহে বিলম্বের কারণে ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ভারতের অন্তত এক হাজার কোটি ডলারের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শিপিং কোম্পানিগুলো এ সপ্তাহের শেষের দিকে মালামাল পরিবহনের খরচ আরও বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন গারোদিয়া।
Advertisement
রপ্তানিকারকরা আরও বলেছেন, শিপিংয়ের সময়সূচিতে বিলম্বের কারণে চলতি মাসের এক-চতুর্থাংশ রপ্তানি আটকে যেতে পারে।
ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সত্য শ্রীনিবাস গত সোমবার বলেছেন, বেশিরভাগ জাহাজের যাত্রাই প্রভাবিত হয়েছে এবং সেগুলো দুই থেকে তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। দীর্ঘ রুটের কারণে জাহাজগুলো আসতে বিলম্ব হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্সকেএএ/