কৃষি ও প্রকৃতি

পটুয়াখালীতে ১৩৬ হেক্টর জমিতে শসা চাষ

পটুয়াখালী জেলায় বাড়ছে শসার চাষ। কৃষকেরা সারাবছরই শসা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় অনেক কৃষক শসা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ফলে এলাকার কৃষকদের আর্থসামাজিক অবস্থার যেমন উন্নতি হচ্ছে; পাশপাশি জেলার বাইরেও পটুয়াখালীর উৎপাদিত শসা সরবরাহ করা হচ্ছে।

Advertisement

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী আঞ্চলিক সড়কের পাশে ১১ একর জমি ইজারা নিয়ে শসা চাষ করেছেন কৃষি উদ্যোক্তা সীরাজ মীর। বাড়ি ভোলা জেলার নীলকমল ইউনিয়নে হলেও এবার তিনি এ এলাকায় শসা চাষ করে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। নিয়মিত পরিচর্যা ও আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের কারণে এবার ফলনও হয়েছে বেশ ভালো।

কৃষি উদ্যোক্তা সীরাজ মীর বলেন, ‘আমাদের এলাকার সাথে সড়ক যোগাযোগ ভালো না। তাই এই এলাকায় শসা আবাদ করছি। এখানে বিকেলে শসা তুলে তা রাতের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানো যায়। বিশেষ করে ঢাকার বাজার ধরতেই বেশি চেষ্টা করি। এখানে নারী-পুরুষসহ অনেক কৃষিশ্রমিক পাওয়া যায়। যে কারণে কৃষিকাজের পরিবেশ ভালো।’

আরও পড়ুন: সিলেটে নাগা মরিচ চাষে লাখপতি ৭ শতাধিক পরিবার

Advertisement

এবার এলাকায় ১১ একর জমিতে শসা আবাদে প্রায় ২৩-২৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যদি প্রতি কেজি শসা ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি করা যায়, তবে অর্ধকোটি টাকার শসা বিক্রি করা সম্ভব। যদি শসার কেজি ১২ থেকে ১৩ টাকায় নেমে আসে, তবে চালান টাকা আসবে। ১০ টাকার নিচে দাম এলে লস হবে বলে জানান এ কৃষি উদ্যোক্তা।

শুধু সীরাজ মীর নন, এলাকার অনেকেই তার দেখাদেখি শসা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। অনেকেই আধুনিক কৃষিতে নিজেদের নিয়োজিত করছেন। এছাড়া বাণিজ্যিক ভাবে শসা চাষের কারণে কৃষি ক্ষেত্রে অনেকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষকেরা গার্হস্থ বাড়িতে শসা চাষ করলে সেটা মাচা পদ্বতিতে করে থাকেন। তবে সীরাজ মীর সরাসরি জমিতেই শসার লতা বিছিয়ে দিচ্ছেন। সেখান থেকেই শসা সংগ্রহ করছেন। এ কারণে কৃষকদের কাছে পদ্ধতিটি বেশ জনপ্রিয় এবং লাভজনক।

আরও পড়ুন: সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদনের আশা

Advertisement

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় শীতকালীন তরমুজের পাশাপাশি কৃষক হাইব্রিড জাতের ডেইজি, ময়নামতি, সুপ্রিম প্লাস ও সুমাইয়া জাতের শসা চাষ করছেন। গত বছর জেলায় ৮ হেক্টর জমিতে শসা চাষ হলেও চলতি বছর ১৬৩ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করা হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় তা এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্য জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।’

পটুয়াখালীর বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। তবে কৃষকেরা মাঠপর্যায়ে এখন ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি করছেন। আগামী রমজান মাসকে উদ্দেশ্য করে অনেকেই নতুন করে শসা চাষ করছেন।

আব্দুস সালাম আরিফ/এসইউ/জেআইএম