কয়েকদিন ধরে রংপুরসহ গোটা উত্তরবঙ্গে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। সূর্যের দেখা মিলছে না। শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীতে প্রাণহীন হয়ে পড়েছে চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলো। মানুষের মতোই নাকাল অবস্থা তাদেরও।
Advertisement
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তীব্র ঠান্ডার মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রাণীগুলোকে নিয়মিত ভিটামিন খাওয়ানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি খাঁচার ভেতরে পশু-পাখি গুটিশুটি মেরে বসে আছে। শীত থেকে বাঁচতে বেশিরভাগ পাখি তাদের পাখার ভেতরে মুখ লুকিয়ে রেখেছে। শীতে নিস্তেজ সিংহ-বাঘ। তীব্র ঠান্ডায় শুয়ে-বসে সময় কাটাচ্ছে ওরা।
লাফালাফি না করে বানরসহ অন্য প্রাণীরা খাঁচার কোনায় চুপিসারে বসে আছে। ময়ূর পেখম তোলা বন্ধ রেখে মাথা লুকিয়ে রেখেছে পালকের ভেতর। হরিণগুলো দলবদ্ধ হয়ে থাকলেও শীতের কারণে এদের শরীরে দুরন্তপনা নেই।
Advertisement
শীতে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. আম্বর আলী তালুকদার জানান, অসুস্থ হলে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। যেসব প্রাণী একেবারে শীত সহ্য করতে পারে না, তাদের প্রতিটি খাঁচার চারদিকে চট দিয়ে ঘিরে রাখা হয়, যেন বাতাস না ঢুকতে পারে। ঘরগুলো পরিষ্কার রাখা হচ্ছে সবসময়। এছাড়া খাঁচার ভেতর খড় দেওয়া হয়েছে যেন প্রাণীরা সেখানে বসে শরীর গরম করতে পারে।
তিনি আরও জানান, পশু-পাখিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন খাওয়ানো হচ্ছে। প্রত্যেকটি প্রাণীকে প্রয়োজনমতো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত চিড়িয়াখানার সব প্রাণীই সুস্থ আছে।
রংপুর চিড়িয়াখানার জু অফিসার ডা. শাহাদত হোসেন বলেন, শীতে প্রাণীগুলো যাতে অসুস্থ হয়ে না পড়ে সেজন্য প্রতিদিনই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাসহ সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘর ও খাঁচা পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি প্রতিদিন পানি বদলে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে শীতের কারণে দর্শনার্থীর সংখ্যা একেবারে কম দেখা গেছে। তীব্র শীতে জবুথবু প্রাণীগুলোকে দেখে খুব বেশি আনন্দ পাওয়া যায় না বলে জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
Advertisement
২১ দশমিক ৫১ একর জমিতে ১৯৮৯ সালে গড়ে ওঠে রংপুর চিড়িয়াখানা। ১৯৯২ সালে উন্মুক্ত করা হলে সেসময় ২৩ প্রজাতির প্রাণী ছিল। ২০১৮ সালে ২৬ প্রজাতির ২১৫টি প্রাণী থাকলেও বর্তমানে রংপুর চিড়িয়াখানায় ১৬১টি প্রাণী রয়েছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান, রংপুর অঞ্চলে গত কয়েকদিন ধরে ৮ দশমিক ৫ থেকে ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। সেইসঙ্গে কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া বইছে।
জেডআইকে
জিতু কবীর/এসআর/এমএস