সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহতের হওয়ার ঘটনায় পুলিশের করা হত্যা মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
Advertisement
রানা প্লাজা ধসে পড়ে সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ওই সময় পর্যন্ত ভবনটির মালিক সোহেল রানার জামিন স্থগিত থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। জামিন স্থগিত থাকায় সোহেল রানা মুক্তি পাচ্ছেন না বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) শুনানির নির্ধারিত দিন সোমবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মুনমুন নাহার।
Advertisement
এর আগে গত বছরের ১০ জুলাই আপিল বিভাগ রানার জামিন আবেদনের বিষয়টি (স্ট্যান্ডওভার) মূলতবি করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানি হয়।
আরও পড়ুন> প্রধান বিচারপতি/ বিচারের সময় ভাবতে হয় যেন চোখের সামনে ১১শ লাশ
গত বছরের ৮ মে ঢাকার অদূরে সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে এই সময় পর্যন্ত সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত থাকবে বলা হয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
এর আগে এই মামলায় সোহেল রানার জামিন মঞ্জুর করে (রুল অ্যাবসলিউট) গত ৬ এপ্রিল রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা গত ৯ এপ্রিল চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি ৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় সেদিন বিষয়টি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। সোহেল রানার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম।
Advertisement
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক নিহত হন। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেন ১ হাজার ১৬৯ জন। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় একই বছরের ২৯ এপ্রিল বেনাপোল থেকে সোহেল রানাকে গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর থেকে তিনি কারাগারে।
অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত করে হত্যা মামলাটি করে পুলিশ। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে একটি মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। আর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে।
এফএইচ/এসএনআর/জেআইএম