কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন দুনিয়ার জীবন মূল্যহীন ও ক্ষণস্থায়ী। মানুষ যেন দুনিয়ার জীবনকে অতিমাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে নিজের আখেরাত নষ্ট না করে। দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সুখের জন্য আখেরাতের চিরস্থায়ী সুখের জীবন নষ্ট না করে।
Advertisement
সুরা কাহাফে আল্লাহ দুনিয়ার জীবনকে তুলনা করেছেন বৃষ্টির পানি এবং তাতে গজিয়ে ওঠা গাছপালার সাথে। বৃষ্টির পানি দ্রুতই শুকিয়ে যায়, গাছপালাও শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহ বলেন, তাদের কাছে পেশ কর পার্থিব জীবনের উপমা - এটা পানির মতো যা আমি বর্ষণ করি আকাশ হতে, যা থেকে যমিনে গাছপালা ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে উদ্গত হয়, অতঃপর তা বিশুস্ক হয়ে এমন চূর্ণ বিচূর্ণ হয় যে, বাতাস ওকে উড়িয়ে নিয়ে যায়; আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি তো পার্থিব জীবনের শোভা, স্থায়ী সৎকাজই তোমার রবের নিকট প্রতিদানে উত্তম এবং প্রত্যাশাতেও উত্তম। (সুরা কাহাফ, আয়াত: ৪৫, ৪৬)
সুরা আহকাফে আল্লাহ বলেছেন, কাফেররা যখন কেয়ামত ও আল্লাহর শাস্তির মুখোমুখি হবে, তাদের মনে হবে দুনিয়ার জীবন ছিল এক দিনের কিছু সময় মাত্র। আল্লাহ বলেন, তুমি ধৈর্যধারণ কর, যেমন ধৈর্যধারণ করেছিল সুদৃঢ় সংকল্পের অধিকারী রাসুলগণ। আর তাদের জন্য তাড়াহুড়া করো না। তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল, যেদিন তারা তা প্রত্যক্ষ করবে, মনে হবে তারা পৃথিবীতে এক দিনের কিছু সময় অবস্থান করেছে। তোমার দায়িত্ব শুধু পৌঁছে দেওয়া, তারপর পাপাচারী সম্প্রদায়ই ধ্বংস হবে। (সুরা আহকাফ: ৩৫)
সুরা নাজিআতে আল্লাহ বলেছেন, যেদিন মানুষ কেয়ামত দেখবে, তাদের মনে হবে, তারা পৃথিবীতে ছিল মাত্র এক সন্ধ্যা বা এক সকাল। (সুরা নাজিআত: ৪৬)
Advertisement
তাই দুনিয়ার এই স্বল্পকালীন জীবনের সুখের জন্য চিরস্থায়ী জীবনের ক্ষতি করা বোকামি। দুনিয়ার সম্পদ, সম্পর্ক, পরিবার পরিজন, সন্তানদের মোহ যেন আল্লাহর স্মরণ ও ইবাদত থেকে গাফেল না করে দেয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে; যারা এ রকম উদাসীন হবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত। (সুরা মুনাফিকুন: ৯)
ওএফএফ/এমএস