দিনাজপুরে আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় এই জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনাজপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
Advertisement
একেতো তাপমাত্রা নেমে এসেছে। এরমধ্যে টানা পাঁচদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। সঙ্গে উত্তরের হিমশীতল বাতাসে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। জনজীবনে দেখা দিয়েছে জবুথবু অবস্থা।
প্রচণ্ড শীতের কারণে বোরো বীজতলা ও আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বোরো বীজতলা। দিনমজুর ও সাধারণ মানুষ কাজে বের হতে পারছেন না। যারা বের হচ্ছেন তারাও কাজ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষের দূর্ভোগ।
দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া সহকারী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপামাত্রা দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গত ৯ জানুয়ারি দিনাজপুরে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১০ জানুয়ারি ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি, ১১ জানুয়ারি ১১ ডিগ্রি ও ১২ জানুয়ারি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার। আগামী কয়েকদিন এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে।
Advertisement
শনিবার সকালে মানুষ বিক্রির হাট হিসেবে পরিচিত ষষ্টীতলার মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকের খুব একটা ভিড় নেই। শীতের কারণে মানুষ কাজে আসতে পারেননি। যে কয়েকজন এসেছেন তাদের ছবি তুলতে গেলে তারা কম্বলের জন্য ছুটে আসেন।
বাবুল হোসেন নামে একজন বলেন, এখানে প্রতিদিন কমপক্ষে ১ হাজার শ্রমিকের সমাগম ঘটে। কিন্তু গত ৫ দিন ধরে শীতের কারণে শ্রমিকরা আসতে পারছে না। আজ এতো বেশি শীত যে ১০০ জন শ্রমিকও আসতে পারেনি। কাজও নেই।
সদর উপজেলার উমরপাইল গোয়াল পাড়া এলাকার কৃষক মঞ্জুরুল ইসলাম ও রাজাপুকুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম নামে দুই কৃষক জানান, শীতের কারণে বোরো বীজতলা কুকড়ে গিয়ে বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তাই শীত থেকে বোরো বীজতলা রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে।
বিরল উপজেলার রসুলশাহপুর গ্রামের কৃষক জুলফিকার আলী বলেন, তিন বিঘা মাটিতে আলুচাষ করেছেন। শীত ও কুয়াশার কারণে আলু গাছে নানা ধরনের রোগবালাই দেখা দিচ্ছে। তাই প্রতিদিন ভিটামিন স্প্রে করতে হচ্ছে। এতে করে আলু উৎপাদনে খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
Advertisement
দিনাজপুর স্টেশনে থাকেন সুমি (৩৫)। শীতের কারণে তার জবুথবু অবস্থা। সকাল সাড়ে ১০টার সময় পুরাতন শীতের কাপড় জড়িয়ে রোদের অপেক্ষায় বসে আছেন। কিন্তু সূর্যের দেখা মিলছে না।
তিনি বলেন, প্রত্যেকবার শীতবস্ত্র পেলেও এবার কেউ এখনো শীতবস্ত্র দেয়নি।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, চলতি শীত মৌসুমে মোট ৬২ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য প্রত্যেকটি উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। এই শীতবস্ত্রগুলো বিতরণ প্রায় শেষের দিকে। নতুন করে আরও ২০ হাজার শীতবন্ত্র চেয়ে মন্ত্রণালয়ে ফ্যাক্স পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় খুব দ্রুতই এই শীতবস্ত্র পাওয়া যাবে।
এমদাদুল হক মিলন/এফএ/জিকেএস