অর্থনীতি

ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত ব্যয় করছে বীমা কোম্পানিগুলো

দেশের বীমা কোম্পানিগুলো ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত ব্যয় করছে। বিশেষ করে লাইফ ইনস্যুরেন্স অযাচিতভাবে পরিচালন ব্যয় বাড়াচ্ছে। এসব ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। কিন্তু দক্ষ জনবলের অভাবে এ ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। গত সাত বছরে বীমা কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত ২ হাজার কোটি টাকা ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে খরচ করেছে। ফলে সময় মতো বীমা দাবি পূরণ করতে পারছে না কোম্পানিগুলো। বুধবার ইনস্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের (আইআরএফ) সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, দেশে যথেষ্ট বীমা পলিসি হয়, কিন্তু এর মধ্যে লেপ্সের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। বীমা কোম্পানিরগুলোর অযাচিত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করার কারণে এমনটি হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে কোম্পানিগুলো পলিসি হোল্ডারদের বীমা দাবি সময় মতো পূরণ করতে পারে না। লোকবলের অভাবে আইডিআরএ এগুলো তদারকি করতে পারছে না। তিনি আরও বলেন, সাধারণ ও জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান মিলে দেশে ৭৭টির মত বীমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতগুলো প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে পরিমাণ লোকবল প্রয়োজন আইডিআরএ’র নেই। বর্তমানে মাত্র ২৫ শতাংশ লোকবল দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে তাদের। অর্থাৎ ৭৫ শতাংশ জনবলের কাজ অল্প লোক দিয়ে করতে হচ্ছে। ফলে বীমা খাতের কার্যকর নিয়্ন্ত্রণ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।শেফাক আহমেদ বলেন, দেশে প্রধান ৩টি আর্থিক খাত হলো- ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার ও বীমা খাত। ব্যাংকিং খাত ও পুঁজিবাজার যেভাবে এগিয়েছে, দুঃখজনক হলেও সত্য বীমা খাত সেভাবে এগুতে পারেনি। এর অন্যতম কারণ, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের যথেষ্ঠ লোকবল ও অবকাঠামোর অভাব। এছাড়া আরকেটি বড় সমস্যা হলো বেসরকারি খাতের বীমা কোম্পানিগুলো পরিচালনার জন্য দক্ষ ব্যবস্থাপক সংকট। প্রতিষ্ঠনগুলো পরিচালনার জন্য যে ধরনের দক্ষ লোক দরকার তা নেই। এতে করে পরিচালন অদক্ষতার কারণে বীমা খাতে নানা অনিয়ম হচ্ছে। ফলে এ খাতের উপর জনগণের আস্থার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে না।নানা কারণে শুরু থেকেই বীমা খাতটি অবহেলিত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আইডিআরএ নিরন্তরভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে এ বছর প্রথমবাবের মত বীমা মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ বছরের শেষের দিকে বিভাগভিত্তিক বীমা মেলার আয়োজন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।সভায় আইআরএফ আহ্বায়ক গোলাম সামদানির নেতৃত্বে সাংবাদিকরা বীমাখাতের উন্নয়নে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন। সাংবাদিকরা বলেন, বীমার উন্নয়নে এবং এ খাত নিয়ে মানুষের মাঝে বিদ্যমান নেতিবাচক ধারণা দূর করতে হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আইডিআরএর যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবারাহ করতে হবে।আইডিআর কার্যলয়ে প্রবেশে সাংবাদিকদের নানা ধরনের বিধিনিষেধের মুখোমুখি হতে হয় উল্লেখ করে গোলাম সামদানি বলেন, সরকারে অন্যান্য রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাংবাদিকরা যেভাবে প্রবেশ করতে পারে, আইডিআরএ সেভাবে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে আইডিআরএর সঙ্গে গণমাধ্যমের একটি অঘোষিত দূরত্ব রয়ে গেছে। আশা করি আজকের এই আয়োজনের মাধ্যমে সেটি আর থাকবে। অনুষ্ঠানে আইআরএফ সদস্যরা ছাড়াও আইডিআরএর সদস্য সুলতান উল আবেদীন মোল্লা, মো. কুদ্দুস খান, মুরশিদ আলম উপস্থিত ছিলেন। এসআই/একে/পিআর

Advertisement