তিনি পূর্ণমন্ত্রী হচ্ছেন, এটা নিশ্চিত। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে রয়েছে নাজমুল হাসান পাপনের নাম।
Advertisement
আজ (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে ৩৬ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবে, থাকবেন ২৫ জন পূর্ণমন্ত্রী, তাদের অন্যতম হলেন বিসিবি সভাপতি পাপন। এখন তার মন্ত্রণালয় কি হবে? সেটা শপথের পর প্রধানমন্ত্রী যখন দপ্তর বণ্টন করবেন, তখন জানা যাবে।
নাজমুল হাসান পাপনের নতুন মন্ত্রী হওয়ার খবর জানার পর থেকে আরও একটি খবর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাহলো নাজমুল হাসান পাপন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কি না?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ প্রশ্ন সবার মুখে। অনেকেই বিশ্বাস করছেন যে, পাপন আর বিসিবি সভাপতি থাকতে পারছেন না। বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগী মহলের একটা বড় অংশের ধারণা, যেহেতু নাজমুল হাসান পাপন মন্ত্রী হচ্ছেন, তাই আর বিসিবি সভাপতি হিসেবে থাকতে পারবেন না তিনি।
Advertisement
চারদিকের গুঞ্জন ও কথা-বার্তায় পরিষ্কার, বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের একটা অংশ ধরেই নিয়েছে বিসিবির গঠনতন্ত্রেই হয়তো এ বিষয়টা আছে। মানে কেউ বোর্ড সভাপতি পদে থাকাকালীন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য হলে তিনি আর বোর্ডে থাকতে পারবেন না।
কিন্তু খবর মোটেই সত্য নয়। এ তথ্যের সবটুকুই ভুল। বিসিবির গঠনতন্ত্রের কোথাও এমন কথা লেখা নেই যে, কেউ মন্ত্রিসভার সদস্য হলে তিনি আর বোর্ডে থাকতে পারবেন না।
বিসিবির সংবিধান ও গঠনতন্ত্রে তেমন কোনো বিধান রাখা হয়নি। এমনকি মন্ত্রী হিসেবে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পালন করার নজিরও রয়েছে। ইতিহাস জানাচ্ছে, গত তিন যুগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে যে ক’জন বিসিবি সভাপতি ছিলেন, তাদের মধ্যে চারজনের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় বিসিবি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার রেকর্ড আছে।
প্রথমজন হচ্ছেন ড. আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি এরশাদ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন আশির দশকে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
Advertisement
এরপর ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লে. কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমানও মন্ত্রী হওয়ার পর বোর্ডপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে বোর্ডপ্রধান হন সে সময়ের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং তিনি পুরো ছয় বছর বিসিবির সফল সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর আবার যখন ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে, তখন বিসিবি প্রধান নির্বাচিত হন আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি তখন ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। কাজেই মন্ত্রী হলে তিনি আর বোর্ডে থাকতে পারবেন না, এ তথ্য মোটেই সঠিক নয়।
মন্ত্রী হওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের কাজের চাপ অনুভব করে নাজমুল হাসান পাপন নিজ থেকে যদি বোর্ড প্রধানের দায়িত্ব ছেড়ে দেন, তাহলে ভিন্ন কথা। তখনই কেবল নতুন বিসিবি প্রধান হিসেবে অন্য কারও দায়িত্ব নেওয়ার প্রশ্ন। পাপন নিজ থেকে দায়িত্ব ছাড়তে না চাইলে অন্য কারও বোর্ড সভাপতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এ নিয়ে নাজমুল হাসান পাপন নিজে থেকে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পাপনের বোর্ড সভাপতি হিসেবে দায়িত্বের মেয়াদকালের আরও বছর দেড়েকের মতো বাকি।
এছাড়া কিছুদিন আগেও পাপন নিজ মুখে জানিয়েছেন, তিনি এই মেয়াদকাল শেষে বোর্ডের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। তাই খুব সহসাই তিনি বোর্ড সভাপতির পদ ছাড়বেন সে সম্ভাবনাও খুব কম।
এআরবি/আইএইচএস/