দেশজুড়ে

মৃদু শৈত্যপ্রবাহে ঠাকুরগাঁওয়ে দুর্ভোগে ছিন্নমূল মানুষ

টানা ৪ দিন ধরে উত্তরের জনপদ ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র ঠান্ডা বাতাসে নাকাল হয়ে পড়েছে নিম্নবিত্ত, দুস্থ ও অসহায় পরিবারগুলো। গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টে দিন কাটছে তাদের। অনেক ব্যক্তি বা সংগঠনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

Advertisement

ঠাকুরগাঁওয়ে তাপমাত্রা নিরূপণের কোনো কার্যালয় নেই। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিদিন তাপমাত্রা পরিমাপ করে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত তিনদিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে জেলায়। বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় জেলায় সর্বনিম্ন ১১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ।

ঠাকুরগাঁও সদরের পশ্চিম বেগুনবাড়ী ধামপাড়া এলাকার খিরপ্রসাদ, সনেকা বালা, স্মৃতি রায়, নরেন রায়, বিরতা রায়, নুনিবালাসহ একাধিক শীতার্ত মানুষ বলেন, প্রতিবারই শুনি সরকারি কম্বল দেছে কত জায়গাত। কিন্তু হামরা একটাও পাইনি কোনোবার।

ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ মতিনাল বর্মন জানান, দিনে থাকা গেলেও রাইতে জারে (প্রচণ্ড শীত) ঘুম আইসে না। সরকার গরিব মাইনসেক (মানুষকে) কম্বল দেয় শুনছু, কোনো সময় একখানও পাইনি। শীতেতো গ্রামের লোকেরই কষ্ট বেশি।

Advertisement

অটোচালক জাহেদুল ইসলাম বলেন, শীতের জন্য রাস্তায় বেশিক্ষণ থাকা যাচ্ছে না। আর রাস্তায় মানুষের চলাফেরাও কমে গেছে। এ কারণে রোজগার একেবারেই কমে গেছে। সদর উপজেলার বিলপাড়া গ্রামের কৃষক নগেন পাল বলেন, ঠান্ডার কারণে ফসলের খেতে কাজ করতে না পারায় কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে। ঠান্ডা উপেক্ষা করে মাঠে কাজ শুরু করলেও বেশিক্ষণ ক্ষেতে থাকা যাচ্ছে না। কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা ও শরীর স্থবির অবশ হয়ে আসছে।

একই গ্রামের দিনমজুর জাহিদুল ইসলাম জানান, তাদের শীতবস্ত্র নেই। তাই ঠান্ডায় নিদারুণ কষ্ট ভোগ করছেন। খড়কুটোর আগুন জ্বালিয়েও ঠান্ডা নিবারণ হচ্ছে না।

ঠাকুরগাঁও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রকিবুল আলম বলেন, কয়েক দিন ধরে ঠান্ডাজনিত রোগী হাসপাতালে বেশি আসছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ শিশু ও বৃদ্ধ। আমরা তাদেরকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

ঠাকুরগাঁও ত্রাণশাখার অফিস সহকারী তসিরুল ইসলাম বলেন, জেলার ৫টি উপজেলায় ৩২ হাজার ৫০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

Advertisement

এফএ/জিকেএস