ময়মনসিংহ-১১ আসনের নতুন সংসদ সদস্য এম এ ওয়াহেদ পাপুয়া নিউগিনির নাগরিক কি না, তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক কি না তারও খোঁজে নিতে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
Advertisement
এছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১১ আসনের ফলাফল ঘোষণা করে জারি করা গেজেট স্থগিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
ওই আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১০ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজীব-উল আলম ও ব্যারিস্টার রাগিব কবির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আনিছুজ্জামান। আর আব্দুল ওয়াহেদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
Advertisement
আদেশের পর আইনজীবী তানজীব-উল আলম সাংবাদিকদের বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ পাপুয়া নিউগিনির নাগরিক। তার ওই দেশের নাগরিকত্ব থাকায় আইন অনুযায়ী তিনি সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না। এ কারণে তার প্রার্থী হওয়া এবং তাকে বিজয়ী করে জারি করা গেজেট চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ। ২৩ ডিসেম্বর সিইসি বরাবরে এ আবেদন করেছিলেন তিনি।
আবেদনে বলা হয়, ২০ ডিসেম্বর সংবাদমাধ্যমের খবরে জানতে পারি যে, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল ওয়াহেদের পাপুয়া নিউগিনি এবং বাংলাদেশের পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি দুটি পাসপোর্ট ব্যবহার করেন।
আবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট ব্যবহার করে পোর্টমোসরি থেকে ঢাকায় আসেন আব্দুল ওয়াহেদ। নির্বাচনী শর্ত অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তির দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। যদি ওই ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান, তাহলে বিদেশি নাগরিকত্ব বাতিল করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। উল্লিখিত ব্যক্তি একাধিক দেশের নাগরিক বিধায় তা তদন্ত সাপেক্ষে যাচাই-বাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে সাড়া না পেয়ে ২৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ। ওই রিট বিচারাধীন থাকায় অবস্থায় ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ ট্রাক প্রতীকে ৯৫ হাজার ২৮০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। আর আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ৫৬ হাজার ৪২১ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এরপর ৯ জানুয়ারি মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদকে নির্বাচিত ঘোষণা করে গেজেট জারি করে নির্বাচন কমিশন।
Advertisement
এফএইচ/জেডএইচ/এমএস