জাতীয়

আওয়ামী লীগ ২২৩, স্বতন্ত্র ৬১ ও জাপা ১১ আসনে জয়ী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৩ আসনে জয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ফলে এ নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। পাশাপাশি ৬১ আসনে বিজয়ী হয়ে দ্বিতীয় স্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

Advertisement

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলেও ২৩ দলকে খালি হাতে ফিরতে হলো। আসন পেয়েছে মাত্র পাঁচটি দল। হাঁকডাক করে তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের ১৩৫ জন প্রার্থী থাকলেও সবারই শোচনীয় পরাজয় হয়েছে।

রোববার (৭ জানুয়ারি) দিনভর ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ হয়। এরমধ্যে ময়মনসিংহ-৩ আসনে ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। ফলে ২৯৮টি আসনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করে। এতে নৌকা প্রতীকের জয় দেখা গেছে।

ইসি সচিব মো. আলমগীর আলম রাত ৩টার পর আর ফলাফল ঘোষণা করেননি। তবে ফলাফলের সার্বিক চিত্র বের করতে নির্ঘুম রাত কাটান অন্যান্য কর্মকর্তারা।

Advertisement

এতে দেখা গেছে, তৃতীয় সর্বোচ্চ জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে জয়ী হয়েছে। জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকরা এবার জিতেছেন মাত্র দুটি আসনে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবার বরিশাল-২ আসন থেকে ও জাসদের রেজাউল করিম তানসেন বগুড়া-৪ আসন থেকে জয়ী হয়েছেন।

হেরেছেন টানা ৩৭ বছরের সংসদ সদস্য জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার মতো নেতা। এছাড়া লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে হেরেছেন জাসদ নেতা মোশাররফ হোসেন।

নির্বাচনে আসন জয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও দলগতভাবে বিজয়ী আওয়ামী লীগের পরে আছে জাতীয় পার্টি, সেক্ষেত্রে এবারও সংসদের বিরোধীদলের ভূমিকা নিতে যাচ্ছে তারা।

নির্বাচনে মোট এক হাজার ৯৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে ২৮টি রাজনৈতিক দল এক হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী দিয়েছে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৩৭ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ঈগল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৮০ জন, আর ট্রাক প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৩৩ জন, যাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতা।

Advertisement

নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল) ও গণতন্ত্রী পার্টি; এই ২৮টি দল প্রার্থী দেয়।

অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী ছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। তাদের প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬৫। জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন ২৬৪ জন। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের ৯৬ জন ও বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙ্গর প্রতীকের ৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, তৃণমূল বিএনপি, বিএনএমসহ ২৩ দলের কোনো প্রার্থী জয়ী হতে পারেননি। তবে বিএনপি থেকে ছেড়ে এসে জয়ী হয়েছেন ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান ওমর। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৯৫ হাজার ৪৭৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাকের পার্টির আবু বকর সিদ্দিক পেয়েছেন ১ হাজার ৬২৪ ভোট।

এমওএস/জেডএইচ/জিকেএস