সরকারি নৈতিকতা আইন লঙ্ঘন ও হিজাব না পরার দায়ে রোয়া হেশমাতি নামের এক তরুণীকে ৭৪ বার বেত্রাঘাতের সাজা দিয়েছে ইরান। পাশাপাশি শরীয়া আইন অনুযায়ী তাকে ১২ মিলিয়ন ইরানি রিয়াল (প্রায় ২৮৬ মার্কিন ডলার) জরিমানাও করা হয়েছে।
Advertisement
শনিবার (৬ জানুয়ারি) ইরানের বিচারবিভাগ পরিচালিত সংবাদ সংস্থা মিজান অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাহসা আমিনির মৃত্যু: ফুঁসছে ইরান, হুঁশিয়ারি প্রেসিডেন্টের
জানা গেছে, রোয়া হেশমাতি (৩৩) একজন কুর্দি বংশোদ্ভূত তরুণী। তিনি তেহরানের ব্যস্ততম উন্মুক্ত স্থানে নৈতিকতা আইন উপেক্ষা করে অন্যদেরও একই কাজ করতে উৎসাহ দিয়েছেন। এই তরুণীর আইনজীবী মাজিয়ার তাতাই জানিয়েছেন, গত বছরের এপ্রিলে মাথায় স্কার্ফ না পরে তোলা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করায় তাকে প্রথমবার গ্রেফতার করা হয়েছিল।
Advertisement
সম্প্রতি নৈতিকতা আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নজরদারি চালানোর জন্য ইরানজুড়ে জনসমাগম হয় এমন এলাকাগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি আইন লঙ্ঘনকারীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দিয়েছে রাইসি প্রশাসন। এমনকি, পোষাক বিধি লঙ্ঘনকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে দেশটির সংসদে নতুন একটি আইন পাস করানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘অনুপযুক্ত পোশাক’ পরলে ১০ বছরের জেল, ইরানে বিল পাস
পোষাক বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ইরানে বেত্রাঘাতের সাজা অস্বাভাবিক হলেও ২০২২ সালের শেষদিকে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় তা বেড়ে যায়। পরে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা পোষাক বিধি লঙ্ঘনকারীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক অভিযান শুরু করে।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে নারীদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। সেই বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীকে গ্রেফতার করে।
Advertisement
আরও পড়ুন: হিজাব না পরা নারীদের শনাক্তে ক্যামেরা বসাচ্ছে ইরান
গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টা পরেই পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই কোমায় চলে যান তিনি। এর তিনদিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই তরুণী মাহসা আমিনি। পুলিশি হেফাজতে ওই তরুনির মৃত্যুর পর হিজাববিরোধী ব্যাপক আন্দোলন করেছিলেন ইরানের নারীরা। তাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছিল।
সূত্র: এএফপি
এসএএইচ