মুসলমানদের একটি প্রধান ও আবশ্যিক বৈশিষ্ট্য ন্যায়পরায়ণতা। পৃথিবীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা ইসলামের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আল্লাহ কোরআনে ন্যায় প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়ে বলেন,
Advertisement
اِنَّ اللّٰهَ یَاۡمُرُکُمۡ اَنۡ تُؤَدُّوا الۡاَمٰنٰتِ اِلٰۤی اَهۡلِهَا وَ اِذَا حَکَمۡتُمۡ بَیۡنَ النَّاسِ اَنۡ تَحۡکُمُوۡا بِالۡعَدۡلِ اِنَّ اللّٰهَ نِعِمَّا یَعِظُکُمۡ بِهٖ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ سَمِیۡعًۢا بَصِیۡرًا
নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন হকদারদের হক তাদের কাছে পৌঁছে দিতে। তোমরা যখন মানুষের মাঝে বিচার করবে তখন ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে কত উত্তম উপদেশই না দিচ্ছেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন। (সুরা নিসা: ৫৮)
মিথ্যা সাক্ষ্য মানুষের প্রতি অন্যায় ও জুলুমের মাধ্যম হয়। সমাজে জুলুমের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যম হয়। ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধক হয়। তাই মিথ্যা সাক্ষ্য ইসলামে অত্যন্ত গুরুতর পাপ। হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) মিথ্যা সাক্ষ্যকে শিরকের মতো মহাপাপের সমতুল্য বলেছেন। খুরায়ম ইবনে ফাতিক (রা.) থেকে বর্ণিত একদিন আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফজরের নামাজ আদায় করে দাঁড়িয়ে তিনবার বললেন, মিথ্যা সাক্ষ্যদানকে আল্লাহর সাথে শিরক করার সমতুল্য করা হয়েছে। তারপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন,فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ حُنَفَاءَ لِلَّهِ غَيْرَ مُشْرِكِينَ بهِ
Advertisement
মূর্তিপূজার অপবিত্রতা থেকে বিরত থাক এবং মিথ্যা কথা পরিহার কর আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ হয়ে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করে। (সুরা হজ: ৩০-৩১) (সুনানে আবু দাউদ)
আরেকটি হাদিসে মিথ্যা সাক্ষ্যকে সবচেয়ে বড় তিনটি পাপের একটি গণ্য করা হয়েছে। আবু বকরা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে সতর্ক করব না? আমরা বললাম, অবশ্যই সতর্ক করুন, হে আল্লাহর রাসুল। তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, পিতা-মাতার নাফরমানি করা। এ কথা বলার সময় তিনি হেলান দিয়ে বসে ছিলেন। এরপর সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, মিথ্যা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। এ কথাটি তিনি ক্রমাগত বলেই চললেন। এক পর্যায়ে আমার মনে হলো তিনি মনে হয় আর থামবেন না। (সহিহ বুখারি)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তির সুপারিশ আল্লাহ তাআলার কোনো দণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়, সে যেন আল্লাহ তাআলার সাথে দ্বন্দ্বে অবতীর্ণ হলো। যে ব্যক্তি জেনে বুঝে কোনো অন্যায় বা অপকর্মের পক্ষে বিবাদ করে, সে ওই কাজ থেকে বিরত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তার ওপর ক্রুদ্ধ ও অসন্তুষ্ট থাকেন। যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে এমন কোনো দোষে অভিযুক্ত করে যা তার মধ্যে নেই, সে যদি তার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিজেকে মুক্ত ও পবিত্র না করে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামীদের দূষিত রক্ত ও পুঁজের মধ্যে নিয়ে ফেলবেন। (সুনানে আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ)
ওএফএফ/এমএস
Advertisement