৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচির প্রথম দিন আজ শনিবার (৬ জানুয়ারি)। হরতাল কেন্দ্র করে সকাল থেকে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসের সংখ্যা হাতে গোনা। যাত্রীদের উপস্থিতিও একেবারে কম। ফলে গাড়ির চাপহীন ঢাকার রাস্তা অনেকটাই ফাঁকা।
Advertisement
দূরপাল্লার জন্য অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা হিসেবে পরিচিত রাজধানীর সায়েদাবাদে শনিবার সকালে ঘুরে দেখা গেছে, অন্য দিনের মতো নেই যাত্রীর জন্য হাক ডাক। মাঝে-মধ্যে দুএকটি বাস ছাড়লেও যাত্রী সংকটে তাও ছাড়ছে বিলম্বে। সায়েদাবাদে সারি সারি বাস অপেক্ষমাণ আছে। এসব গাড়ির অধিকাংশই আজ চলবে না বলে জানিয়েছেন চালকরা।
শ্যামলীর সায়েদাবাদ কাউন্টারের ম্যানেজার আজিজুর রহমান পান্না জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে দুইটা টিকিটও বিক্রি করতে পারিনি। কোনো যাত্রী নেই। হরতাল আর ভোটের জন্য মানুষ আতঙ্কে আছে। এগুলো আমাদের জন্য সমস্যা। কিছু গাড়ি ছাড়ছে, যাত্রী যা পাচ্ছে তা নিয়েই রওনা দিচ্ছে। আমরা তো যাত্রী ছাড়া গাড়ি ছাড়তে পারি না। দু-চারজন নিয়ে গাড়ি চালালে তো আমাদের খরচ উঠবে।
ঈগল পরিবহনের ম্যানেজার মোহাম্মদ কাওসার জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে কোনো গাড়ি ছাড়তে পারিনি। যাত্রী না থাকলে গাড়ি ছাড়বো কীভাবে। লোকাল গাড়িগুলা যাত্রী রাস্তায় রাস্তায় নিয়ে ছাড়তেছে। আমরা তো কাউন্টারে যাত্রী না উঠিয়ে ছাড়তে পারি না। সেজন্য যাত্রীর অভাবেই গাড়ি চালাতে পারতেছি না।
Advertisement
এদিকে রাজধানীর ধোলাইপাড় থেকে বরিশাল, মাদারিপুরসহ অনেক জেলার বাস চলাচল করে। কিন্তু আজ সেখানেও নেই গাড়ির চাপ। কিছু যাত্রী গাড়ির অপেক্ষা করলেও নিজ রুটের বাস পাচ্ছেন না।
সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম জাগো নিউজকে বলেন, যাত্রী কম তাই বাস কম চলছে। যাত্রী পেলে আমরা গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছি। হরতালের মধ্যে গাড়ি চললেও কোনো সমস্যার কথা শুনিনি এখনো। কোনো গাড়িতে ১৫-২০ জন যাত্রী পেলেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ভোটের আগের দিন তাই যাত্রী কম। কিন্তু হরতালের কোনো প্রভাব এতে নেই।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূরপাল্লার যান ও মোটরসাইকেল নেইঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্বাভাবিকের চেয়ে তুলনামূলক কম সংখ্যক যানবাহন চলছে এ এলাকার সড়কে। হরতালে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল করছে কম। দূরপাল্লার গাড়ি চোখে পড়েনি ও রাস্তায় নেই কোনো মোটরসাইকেল।
সাইনবোর্ড থেকে যাত্রাবাড়ী সায়েদাবাদ পর্যন্ত দূর পাল্লার বাস কম। হরতালে বাস, মিনিবাস, লেগুনা, ব্যাক্তিগত গাড়ি ও সিএনজি চালিত অটোরকিশার দখলে রাস্তা। ব্যক্তিগত পরিবহন, সিএনজি ও রিকশায় চেপে মানুষ চলাচল করছে বেশি।
Advertisement
জরুরি পরিবহন ছাড়া দূরপাল্লার পরিবহন দেখা যায়নি। এছাড়া গণপরিবহনও হাতেগোনা একটি দুটি চলতে দেখা গেলেও অটোরিকশা, ব্যাক্তিগত গড়ি ও লেগুনার দখলে রয়েছে মহাসড়ক।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, মাতুয়াইল, রায়ের বাগ, শনিরআখড়া ও যাত্রাবাড়ী ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জের দিক থেকে হাতেগোনা কয়েকটি গণপরিবহন চলতে দেখা গেলেও অটোরকিশা, লেগুনা ও মিনিবাসের দখলে রয়েছে মহাসড়ক। তবে এসব এলাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে এর আগের হরতালে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়নসহ প্রস্তুত রাখা হতো জল কামান ও আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি)। সকালে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ ও কাজলা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কোনো সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা যায়নি।
এফএইচ/আইএইচআর/এমআইএইচএস/এমএস