জুবাইর ইবনুল আওয়াম (রা.) বলেন, যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হলো,
Advertisement
وَ اَنۡذِرۡ عَشِیۡرَتَکَ الۡاَقۡرَبِیۡنَতুমি তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক কর। (সুরা শুআরা: ২১৪)
তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) আবু কুবাইস পাহাড়ে আরোহণ করে চিৎকার করে বললেন, হে আব্দে মানাফের পরিবার! আমি আপনাদের জন্য সতর্ককারী হয়ে এসেছি!
তার বক্তব্য শুনতে কুরাইশের অনেকে এগিয়ে এলো এবং তিনি তাদেরকে সাবধান করলেন, সতর্ক করলেন।
Advertisement
তারা বললো, আপনি দাবি করেন আপনি নবি, আপনার কাছে ওহি আসে। নবিদের মধ্যে সুলাইমানকে (আ.) আল্লাহ বাতাস ও পাহাড়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ দিয়েছিলেন। মুসাকে (আ.) সাগরের ওপর নিয়ন্ত্রণ দিয়েছিলেন। ঈসা (আ.) মৃতদের জীবিত করতে পারতেন। আপনি যেহেতু দাবি করছেন আপনি তাদের মতোই আল্লাহর নবি, তাই আল্লাহর কাছে দোয়া করুন তিনি যেন মক্কার এই পাহাড়গুলো সরিয়ে এখানে নদী প্রবাহিত করে দেন। ওই পানি দিয়ে ফসল ফলিয়ে আমরা আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারবো। অথবা আল্লাহর কাছে দোয়া করুন তিনি যেন আমাদের মৃতদের জীবিত করে দেন। অথবা দোয়া করুন আল্লাহ যেন আপনার নিচের এই পাহাড়টিকে স্বর্ণ বানিয়ে দেন। আমরা সেটা কেটে কেটে বিক্রি করবো। শীত ও গরমের মৌসুমে আমাদের আর ব্যবসায়িক সফরে যেতে হবে না।
তখন আল্লাহর রাসুলের (সা.) মধ্যে ওহি নাজিল হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পেলো। ওহি অবতীর্ণ হওয়া শেষ হলে তিনি বললেন, যার হাতে আমার জীবন তার শপথ করে বলছি, আপনারা যা চেয়েছেন আল্লাহ তা আমাকে দিয়েছেন। আমি চাইলে তা হবে। কিন্তু তিনি আমাকে বেছে নিতে বলেছেন, আমি যদি আল্লাহর রহমতের দরজা গ্রহণ করি তাহলে আপনাদের মধ্যে যারা ইমান আনার তারা ইমান আনবে, আল্লাহর রহমতে প্রবেশ করবে, যদি আপনারা চেয়েছেন তা আপনাদের ওপর চাপিয়ে দেই, তাহলে আপনারা আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরে যাবেন, আপনাদের মধ্যে যাদের ইমান আনার সম্ভাবনা ছিল তারাও ইমান আনবে না। আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন, যদি আপনারা যা চেয়েছেন তা দেওয়ার পরও আপনারা কুফরি করেন, তাহলে তিনি আপনাদেরকে এমন শাস্তি দেবেন যা সৃষ্টি জগতে আর কাউকে দেননি।
আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হলো,
وَ مَا مَنَعَنَاۤ اَنۡ نُّرۡسِلَ بِالۡاٰیٰتِ اِلَّاۤ اَنۡ کَذَّبَ بِهَا الۡاَوَّلُوۡنَ وَ اٰتَیۡنَا ثَمُوۡدَ النَّاقَۃَ مُبۡصِرَۃً فَظَلَمُوۡا بِهَا وَ مَا نُرۡسِلُ بِالۡاٰیٰتِ اِلَّا تَخۡوِیۡفًا
Advertisement
আমি নিদর্শন প্রেরণ করা হতে এজন্য বিরত থাকি যে, পূর্বের লোকেরা তা মিথ্যা মনে করে প্রত্যাখ্যান করেছিল। আমি সামুদ জাতির নিকট উষ্ট্রী পাঠিয়েছিলাম এক প্রত্যক্ষ নিদর্শন হিসেবে কিন্তু তারা তার ওপর জুলম করেছে; ভয় প্রদর্শনের উদ্দেশ্যেই কেবল আমি নিদর্শন পাঠিয়ে থাকি। (সুরা ইসরা: ১৫৯)
আরও অবতীর্ণ হলো,
وَ لَوۡ اَنَّ قُرۡاٰنًا سُیِّرَتۡ بِهِ الۡجِبَالُ اَوۡ قُطِّعَتۡ بِهِ الۡاَرۡضُ اَوۡ کُلِّمَ بِهِ الۡمَوۡتٰی بَلۡ لِّلّٰهِ الۡاَمۡرُ جَمِیۡعًا اَفَلَمۡ یَایۡـَٔسِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡ لَّوۡ یَشَآءُ اللّٰهُ لَهَدَی النَّاسَ جَمِیۡعًا وَ لَا یَزَالُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا تُصِیۡبُهُمۡ بِمَا صَنَعُوۡا قَارِعَۃٌ اَوۡ تَحُلُّ قَرِیۡبًا مِّنۡ دَارِهِمۡ حَتّٰی یَاۡتِیَ وَعۡدُ اللّٰهِ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُخۡلِفُ الۡمِیۡعَادَ
কুরআন দিয়ে পর্বতকে যদি গতিশীল করা যেত, কিংবা জমিনকে দীর্ণ করা যেত কিংবা তা দিয়ে মৃত মানুষকে কথা বলানো যেত (তবুও তারা তাতে বিশ্বাস করত না)। বরং সব কিছুই আল্লাহর ক্ষমতাভুক্ত। যারা ঈমান এনেছে তারা কি জানে না যে, আল্লাহ ইচ্ছে করলে সব মানুষকে সৎ পথে পরিচালিত করতে পারতেন। যারা কুফুরি করে তাদের কার্যকলাপের কারণে তাদের ওপর কোনো না কোনো বিপদ আসতেই থাকে কিংবা তাদের ঘরের আশেপাশেই নাজিল হতে থাকে, যতক্ষণ না আল্লাহর ওয়াদা পূর্ণ হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ ওয়াদার ব্যতিক্রম করেন না। (সুরা রাদ: ৩১)
সূত্র: আবু ইয়া’লা
ওএফএফ/জিকেএস