সুরা বাকারার ১-৫ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, (১) আলিফ-লাম-মীম। (২) এই সেই কিতাব, যাতে কোনো সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত। (৩) যারা গায়েবের প্রতি ইমান আনে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। (৪) যারা ঈমান আনে তাতে, যা তোমার প্রতি নাজিল করা হয়েছে এবং যা তোমার পূর্বে নাজিল করা হয়েছে। আর আখেরাতের প্রতি তারা ইয়াকিন রাখে। (৫) তারা তাদের রবের পক্ষ থেকে হেদায়াতের উপর রয়েছে এবং তারাই সফলকাম।
Advertisement
এ আয়াতগুলোর ফিকহ ও আহকাম
এ আয়াতে উল্লিখিত গুণগুলো একজন মুমিনদের গুণাবলি ও আদর্শ। যা অদৃশ্য ও তাদের জ্ঞানের বাইরে তাও তারা বিশ্বাস করে যেমন আল্লাহর সত্ত্বা, ফেরেশতা ও আখেরাতসহ কোরআনের সব সংবাদ তারা বিশ্বাস করে। তাদের ইমান সুসজ্জিত হয় নেক আমলে। তারা ফরজ নামাজ আদায় করে। তারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে; জিহাদে ব্যয় করে, দরিদ্র্য ও অভাবীদের সাহায্য করে, স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করে, আত্মীয়দের জন্য খরচ করে।
তারা আল্লাহর অবতীর্ণ শেষ আসমানি কিতাব কোরআনসহ সব আসমানি কিতাবের ওপর ইমান আনে। কোরআনের ওপর তারা ইমান আনে কোরআনের বিধিবিধান বিস্তারিত জেনে, পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবসমূহকে আল্লাহর কিতাব বলে বিশ্বাস করে। পাশাপাশি মনে রাখে যে, ওই কিতাবগুলোর বিধিবিধান ও শরিয়ত আল্লাহ রহিত করেছেন এবং মানুষের কাছে সেগুলোর যে রূপ বিদ্যমান রয়েছে, তাতে নানা বিকৃতিও ঢুকে গেছে। তাই সেগুলো এখন আর অনুসরণযোগ্য নয়।
Advertisement
এ আয়াতগুলো থেকে বোঝা যায়, তাকওয়া হলো আল্লাহর অবাধ্যতাকে ভয় করা এবং উল্লিখিত সবগুণাবলির সম্মিলন হলো তাকওয়া। আল্লাহ কোরআনে বারবার মানুষকে তাকওয়া অর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন। তাকওয়া একজন মুমিনের সর্বোত্তম অর্জন।
যারা উল্লিখিত গুণাবলি অর্জন করে, কোরআন তাদের জন্য হেদায়াত হয়। অর্থাৎ জীবনের সব কাজে ও অবস্থায় কোরআনকে তারা পথনির্দেশিকা হিসেবে গ্রহণ করে। কোরআনের আদর্শ থেকে তারা বিচ্যুত হয় না। ফলে দুনিয়াতে তারা লাভ করে শান্তি ও সৌভাগ্য লাভ করে, আখেরাতেও তাদের জন্য রয়েছে মুক্তি ও প্রতিদান।
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, সুরা বাকারার শুরুতে চারটি আয়াতে মুমিনদের বৈশিষ্ট্য, দুটি আয়াতে কাফেরদের বৈশিষ্ট্য, তেরোটি আয়াতে মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে।
ওএফএফ/জেআইএম
Advertisement