বামপন্থি দলগুলো নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও তাতে কোনো প্রভাব পড়বে না, কারণ বাম ভাইদের কোনো ভোট নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বাম জোট- এ বিষয়ে মত জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাম ভাইদের আমি খুব সম্মান করি। কারণ তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ও প্রগতিশীল শক্তি। আমার মধ্যেও কিছু বাম চিন্তা আছে। আমাদের দলেরও মূল স্তম্ভ সোশ্যালিজম। যে কারণে বামদের সম্মান করি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের অনেক বিষয় আমি সমর্থনও করি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বাম ভাইদের কোনো ভোট নেই, তারা ভোটে মানুষের সমর্থন পায় না। ঢাকা শহরে তো কেউ কেউ মেয়র নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু ৩৭ লাখ ভোটের এই ঢাকা শহরে তাদের ভোটের সংখ্যা হাজারের অংশ পার হয়নি। তাদের ভোট নেই, তারা ভোট বর্জন করুক কিংবা না করুক; তার কোনো প্রভাব নেই।
Advertisement
আরও পড়ুন>> শেখ হাসিনা ভিসানীতি-নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করেন না
এ নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যত শতাংশ ভোট পড়ে, তার চেয়ে বেশি ভোট এই নির্বাচনে পড়বে বলে আশা করছি।
ব্রাসেলসভিত্তিক আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার এবারও একটি গ্রহণযোগ্য প্রতিপক্ষ ছাড়া নির্বাচন করতে যাচ্ছে, যা সহিংসতার ঝুঁকি বাড়াবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে এ পর্যন্ত কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় অনেক কম।
‘ভারতে স্থানীয় সরকারসহ অন্যান্য নির্বাচনে যে মাত্রায় সহিংসতা হয়, সেগুলোর চেয়ে আমাদের দেশে এ পর্যন্ত যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা অনেক কম। নির্বাচনে কোন দল অংশগ্রহণ করবে, জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছে কি না; সেটা মুখ্য বিষয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও অনেক নামকরা দল অংশগ্রহণ করেনি, অনেক বিখ্যাত নেতা অংশ নেননি। সেই নির্বাচনে জনগণ ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছিল।’
Advertisement
আরও পড়ুন>> নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী
তিনি বলেন, সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। কাজেই ব্রাসেলসে বসে রিপোর্ট লেখা অনেক সহজ। কিন্তু যদি দেশে একটু এসে দেখে যেতো, গ্রামগঞ্জে ঘুরে যেতো, তাহলে দেখতে পেত, কী পরিমাণ উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তারা মাসখানেক আগে এ রিপোর্ট লিখেছিলেন। কিন্তুি গত ২০ দিনে লোকজন কতটা নির্বাচনমুখী তা দেখতে পারলে রিপোর্টটি তারা সংশোধন করে নিতেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আশা করি, রিপোর্টটি তারা পরে সংশোধন করবেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশে একটি ব্যাপক নির্বাচনী উৎসব তৈরি হয়েছে। সবাই আজ এই উৎসবে শামিল হয়েছেন। দেশজুড়ে নির্বাচনী প্রচারণার জোয়ার বইছে। কার্যত আজ নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন। আগামীকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার করা যাবে।
‘একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সার্কভুক্ত দেশগুলো, ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই নির্বাচনকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে। তারা এরই মধ্যে পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন>> অর্ধশতাধিক আসনে স্বতন্ত্রের দাপট, চাপে দলীয় প্রার্থী
হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে যেভাবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এসেছিল, ঠিক একইভাবে এবার বিদেশ থেকে পর্যবেক্ষক এসেছেন। নির্বাচন নিয়ে এই ব্যাপক-উৎসাহ উদ্দীপনা বলে দিচ্ছে, আন্তর্জাতিক মহলও এটিকে গ্রহণ করেছে।
সেক্ষেত্রে বিএনপির নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা কিংবা নির্বাচনবিরোধী প্রচার জনগণ গ্রহণ করেননি বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন প্রতিহত করতে বিএনপির ঘোষণা কার্যত জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। যে কারণে তারা এখন প্রতিহত করা থেকে সরে এসে নির্বাচন বর্জনের ডাক দিচ্ছে। অর্থাৎ বিএনপি পিছু হটেছে।
আইএইচআর/বিএ/জিকেএস