পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে তিন সহস্রাধিক নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে একাট্টা হচ্ছে সারাদেশের নার্সরা। পিএসসির বদলে আগের নিয়মে ব্যাচ, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবিতে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ও বেসিক গ্র্যাজুয়েট বেকার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাকর্মীরা আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের দাবি ন্যায্য মনে করে সহমর্মিতা জানিয়ে ক্রমেই আন্দোলনে শরিক হচ্ছেন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে চাকরিরত নার্সরা। আন্দোলনকারী বেকার নার্সরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করে গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এদিকে, রাজধানীসহ সারাদেশের অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা গতকাল ও আজ (৪ ও ৫ এপ্রিল) দুদিন ধরে পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারির প্রতিবাদ ও সম্প্রতি আন্দোলনকারী নার্সদের ওপর শাহবাগে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে কালো ব্যাচ ধারণ কর্মসূচি পালন করছে। বাংলাদেশ ডিপ্লোমা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএনএ), বাংলাদেশ ডিপ্লোমা বেকার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিবিএনএ) ও বাংলাদেশ বেসিক গ্র্যাজুয়েট বেকার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিবিজিবিএনএ) একাধিক শীর্ষ নার্স নেতা জাগো নিউজকে জানান, সরকারের অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সারাদেশের নার্সরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। তারা রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি সুবিচার পেতে উচ্চ আদালতে রিট মামলা দায়ের করবেন। কি কারণে রিট করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে নেতারা জানান, নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এমন ধোঁয়া তুলে আন্দোলনকে অযৌক্তিক বলে প্রমাণ করার অপচেষ্টা চলছে। কিন্তু নার্সরা দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার পর এই সরকারের আমলেই সর্বশেষ ২০১৩ সালে পিএসসির বদলে ব্যাচ, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছে। পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ না হওয়ায় ওই সময় হাজার হাজার যোগ্য বেকার নার্স আবেদনই করতে পারেনি। তাহলে কী ওই সময় যোগ্য নার্সদের বঞ্চিত করা হয়নি। তারা আরো জানান, দেশে বর্তমানে বেকার নার্সের সংখ্যা ২২ হাজারের বেশি। ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পাশ করেছে এমন বেকার নার্সের সংখ্যা আনুমানিক সাড়ে ৪ হাজার। ২০১৩ সালের মতো ব্যাচ, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নার্স নিয়োগ দেয়া হলে তারা চাকরিতে ঢুকতে পারবে। আদালতে এ বিষয়টি উল্লেখ করে তারা সুবিচার চেয়ে রিট মামলা করবেন বলে জানান। বিডিবিএনএ সভাপতি রীনা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটে অনেক নার্স অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সদয় সহানুভূতি কামনা করে পিএসসির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে আগের নিয়মে নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান তিনি। রীনা অক্তার বলেন, সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের নার্সরা দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কালো ব্যাচ ধারণসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। রিট মামলা দায়েরের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেকার নার্সরা সরকারের সদয় বিবেচনার অপেক্ষায় রয়েছেন, প্রয়োজনে রিট আবেদন দায়ের করা হতে পারে বলে তিনি আভাস দিলেও কবে নাগাদ করবেন তা জানান নি।অপরদিকে বাংলাদেশ বেসিক গ্র্যাজুয়েট নার্সেস সোসাইটির সভাপতি রাজীব কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ১০ এপ্রিল থেকে আমরণ অনশন করা হবে। এমইউ/জেএইচ/এএইচ/পিআর
Advertisement