ক্যাম্পাস

নির্বাচন বর্জনসহ চার দাবিতে ঢাবি শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি

৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন, সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও নির্দলীয় সরকার গঠনসহ চার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তিনি।

Advertisement

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর নাম আকাশ বিশ্বাস। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। বর্তমানে তাকে একাই অবস্থান পালন করতে দেখা যায়।

তার চার দফা দাবি হলো-একদলীয় সরকারের অধীনে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে নির্দলীয় সরকার গঠন করতে হবে ও সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া চালু করতে হবে, গুম, খুন, নির্যাতনের বিচার করতে হবে ও শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। সব নাগরিকের নাগরিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে, রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

সরেজমিন দেখা যায়, অবস্থানকারী শিক্ষার্থী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তার অবস্থানের পক্ষে চারটি দাবির লেখা সংবলিত একটি ডিজিটাল ব্যানার ও কয়েকটি প্ল্যাকর্ড নিয়ে বসে আছেন। আশপাশে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ তাকে দেখছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষ তার দাবির প্রতি সংহতি জানাচ্ছেন। এছাড়া মানুষের কাছে তার দাবিগুলো তুলে ধরার জন্য কিছু লিফলেটও সামনে রেখেছেন।

Advertisement

অবস্থান কর্মসূচিতে বসা শিক্ষার্থী নিজেকে বাংলাদেশের একজন বিক্ষুব্ধ নাগরিক ও শিক্ষার্থী দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হলেও আমাদের রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। সংবিধানেই এক ব্যক্তিকেন্দ্রীক ও এক দলীয় শাসনকাঠামোর বীজ বপন করা আছে। তাই একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচনে বাংলাদেশের নাগরিকগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আবারো একই রকম একটি নির্বাচন সামনে হতে যাচ্ছে যেখানে বাংলাদেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনর্বার ভুলুণ্ঠিত হবে। তাই আমি এ নির্বাচন বর্জন করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও তরুণদের বিরাজনীতিকরণ করা হয়েছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এমন একটা রাষ্ট্র চাই যেখানে নাগরিকরা নির্ভয়ে কথা বলতে পারবে। তাই রাজনৈতিক পরিসর সংকোচনের চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হিস্যা ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।’

আল সাদী ভূঁইয়া/এমআইএইচএস/জেআইএম

Advertisement