জাতীয়

গুলশান-বনানী-বারিধারায় বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ, বন্ধ হাতিরঝিল

ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে ৩১ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় নগরবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন আনন্দ উৎসবে অংশগ্রহণ করবে। এ আনন্দ উৎসব উদযাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ঐতিহ্যবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এসব ব্যক্তি আনন্দের আতিশয্যে পটকাবাজি, আতশবাজি, ফানুস ওড়ানো, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়। ক্ষেত্র বিশেষে প্রকাশ্যে অভদ্রজনোচিত আপত্তিকর আচরণ করে। এসব নৈতিক মূল্যবোধ পরিপন্থি কর্মকাণ্ড একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা তৈরি করে।

Advertisement

ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার স্বার্থে বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ১২টি নির্দেশনার কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো

১. ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায় এবং প্রকাশ্য স্থানে কোনো ধরনের সভা-জমায়েত বা উৎসব করা যাবে না।

Advertisement

২. উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান, সমাবেশ, নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।

৩. কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস ওড়ানো বা ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না।

৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত যানবাহন পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে।

৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারী ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তন করবেন এবং রাত ৮টার পরে প্রবেশের ক্ষেত্রে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যকে পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে।

Advertisement

৬. গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় রাত ৮টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে এসব এলাকায় বসবাসরত নাগরিকরা নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে।

৭. একইভাবে উপর্যুক্ত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যে সব নাগরিক বসবাস করেন না তাদেরকে ওইসব এলাকায় গমনের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলো।

৮. হাতিরঝিল এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে কোনো সমাবেশ বা অনুষ্ঠান করা যাবে না এবং কোনো যানবাহন থামিয়ে অথবা পার্কিং করে কেউ অবস্থান করতে পারবে না।

৯. গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হলো।

১০. ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না।

১১. আবাসিক হোটেলগুলো সীমিত আকারে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে।

১২. ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সব প্রকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না।

এছাড়াও নগরবাসীকে ট্রাফিক নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হলো:

১. ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টা হতে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনযোগে প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।

২. রাত ৮টা হতে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে মহাখালী এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, ঢাকা গেট, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং এলাকাগুলোতে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা যাবে না, তবে এসব এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।

৩. ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা হতে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যতিত অন্য যেকোনো ব্যক্তি বা যানবাহন কেবলমাত্র পুরনো হাইকোর্ট- দোয়েল চত্বর-শহীদ মিনার-জগন্নাথ হলের দক্ষিণ গেট-পলাশী মোড় দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। এসব এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অন্যান্য ক্রসিং বন্ধ থাকবে।

৪. ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টা থেকে শাহবাগ, নীলক্ষেত ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, বক্শী বাজার ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং এবং চাঁনখারপুল/শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে কোনো প্রকার যানবাহন প্রবেশ করবে না।

৫. সড়ক ব্যবহার সংক্রান্ত যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে হবে এসব নম্বরে। ডিসি ট্রাফিক (গুলশান) ০১৩২০-০৪৪৩৬০, এডিসি ট্রাফিক (গুলশান) ০১৩২০-০৪৪৩৬১, এসি ট্রাফিক (গুলশান) ০১৩২০-০৪৪৩৭২, এসি ট্রাফিক (মহাখালী) ০১৩২০-০৪৪৩৭৫, এসি ট্রাফিক (বাড্ডা) ০১৩২০-০৪৪৩৭৮, ডিসি ট্রাফিক (রমনা) ০১৩২০-০৪২২৬০, এডিসি ট্রাফিক (রমনা) ০১৩২০-০৪২২৬১, ডিসি (গুলশান) ০১৩২০-০৪১৪২০ ও ডিসি (রমনা) ০১৩২০-০৩৯৪৪০।

যে কোনো অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট নাগরিকদের কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হলো। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ইংরেজি নববর্ষ-২০২৪ উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে।

টিটি/এসএনআর/এএসএম