রাজনীতি

৯০ শতাংশ জনগণ আওয়ামী লীগকে বদদোয়া করছে: অলি আহমদ

আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, ‘শতকরা ৯০ জন লোক আওয়ামী লীগকে বদদোয়া করছে। এই বদদোয়া থেকে বাঁচুন। দেশকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিন।’

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধ করুন। দেরিতে হলেও আপনি জেগে উঠুন। মানুষ আপনাকে চিরদিন স্মরণে রাখবে। এই নির্বাচন বন্ধ করুন। সবার সঙ্গে বসেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন করে নতুনভাবে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। কারণ, আপনি নির্বাচন করলেও আপনার পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে না।’

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর মগবাজারে এলডিপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। অলি আহমদ বলেন, ‘আজকে যেসব ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন তারা বিরোধী দলের কেউ না। তারা হলো আওয়ামী লীগের সমর্থক গোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম। এগুলো গোয়েন্দা সংস্থার সৃষ্ট রাজনৈতিক দল।’

তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএম আছে। এগুলো হলো আপনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) ক্রীতদাস। যাদেরকে আপনি কিনে নিয়েছেন তারাই বর্তমানে নির্বাচনে আছে। তারা প্রত্যেকেই আপনার সমর্থক গোষ্ঠী। সুতরাং এটা কোনো অবস্থাতেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হিসেবে মেনে নেওয়া যায় না। আর জনগণের এই নির্বাচনের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এলডিপির প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আপনার কাছে অনুরোধ করবো, আল্লাহর ওয়াস্তে এই খেলা বন্ধ করেন। এই নির্বাচন বন্ধ করেন, দেশকে দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা করেন, দেশকে গৃহযুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা করেন, দেশকে রক্তারক্তির হাত থেকে রক্ষা করেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে আপনার ওপরে দায়িত্ব অনেক বেশি। ৭ তারিখের আগে আপনি এই নির্বাচনের খেলা বন্ধ করেন। এটা জনগণ ও দেশের কোনো উপকারে আসবে না।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন করলেও আপনার পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে না। কারণ অর্থনীতি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, আপনি কিংবা আপনার সরকারের পক্ষে এই অর্থনীতিকে পুনরায় আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে না। আপনার এবং আপনার দলের ওপর জনগণের কোনো আস্থা নেই।’

অলি আহমদ বলেন, ‘শতকরা ৯০ জন লোক আপনাকে (শেখ হাসিনা) এবং আপনার দলকে বদদোয়া করছে। এই বদদোয়া থেকে বাঁচুন। আর দেশকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিন। দেরিতে হলেও আপনি জেগে উঠুন। মানুষ আপনাকে চিরদিন স্মরণে রাখবে। এই নির্বাচন বন্ধ করুন।’

তিনি বলেন, ‘জনগণকে বলবো, এটা আপনাদের মৃত্যুর নির্বাচন, ধ্বংসের নির্বাচন। এটা আপনাদের ছেলে-মেয়েদের ধ্বংসের নির্বাচন, বাংলাদেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের ধ্বংসের নির্বাচন। তাই এই নির্বাচন থেকে বিরত থাকুন। কিছু টাকা ও কাজের লোভে নিজেকে বিক্রি করবেন না।’

Advertisement

অলি আহমদ আরও বলেন, ‘আমি কোনো প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা যারা রাজনীতি করি আমাদের মধ্যে একটা সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে। অমানুষের মতো রাজনীতি করে বেঁচে থেকে কোনো লাভ নেই। প্রতিনিয়তই বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা সাজা দিয়ে জেলে ঢোকানো হচ্ছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে তাদের কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে যে নিপীড়ন, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা হয়েছে তা ১০০ বছরেও বাংলাদেশে হয়নি। ২০১৪ সালের আগে গায়েবি মামলায় কোনো হদিস ছিল না। এরপর থেকে আমরা দেখেছি, কোনো ব্যক্তি ঢাকায় অবস্থান করছেন, নিজ এলাকায় যাননি। কিন্তু এলাকাতে গায়েবি মামলার আসামি! এ ছাড়া প্রত্যেকটি মামলাতে বলা হয়, অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জন। সুতরাং যাকে যখন যেখানে পায় তাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আর নতুন আরেকটি সিস্টেম শুরু হয়েছে, এটা হলো- প্রতিনিয়ত বিরোধী দলের নেতারা জামিন নেওয়ার জন্য আদালতে যান। যখন জামিন নিয়ে ফেরেন তখন তাদেরকে আবার ধরে নেওয়া হয়। একটা বিশাল অঙ্কের টাকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

কেএইচ/কেএসআর/এএসএম