আন্তর্জাতিক

সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি বাড়ানোর তাগিদ দিলেন কিম

পারমাণবিক কর্মসূচিসহ যুদ্ধের সব ধরনের প্রস্তুতি বেগবান করার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নজিরবিহীন সংঘাতমূলক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি এমন নির্দেশ দিলেন। দেশটির ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির এক বৈঠকে বক্তৃতা দেন কিম।

Advertisement

যুদ্ধের প্রস্তুতি আরও ত্বরান্বিত করতে পিপলস আর্মি এবং যুদ্ধাস্ত্র শিল্প, পারমাণবিক অস্ত্র এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা খাতের জন্য সামরিক কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করে দেন দেশটির এই সর্বোচ্চ নেতা। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র-দ.কোরিয়ায় পারমাণবিক হামলার হুঁশিয়ারি দিলেন কিম

কিম জোর দিয়ে বলেন, কোরীয় উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্র দেশগুলো নজিরবিহনীর পদক্ষেপের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। তবে যুদ্ধের প্রস্তুতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি কেসিএনএ।

Advertisement

চলতি বছর উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার পরেও পিয়ংইয়ং ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে উদ্বিগ্ন দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্র। উত্তর কোরিয়াকে প্রতিহত করতে নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার করেছে এই তিন দেশ। উত্তর কোরিয়া কবে, কখন, কোথায় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে তার সঠিক তথ্য জানতে একটি সিস্টেমও সক্রিয় করা হয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে পরমাণু চালিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি সাবমেরিন দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দর শহর বুসানে পৌঁছায়। একই সময়ে সিউল ও টোকিওর সঙ্গে এক যৌথ মহড়ায় দূরপাল্লার বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে ওয়াশিংটন। এতে ক্ষেপে গেছে পিয়ংইয়ং।

তবে বসে নেই উত্তর কোরিয়াও। তার তিন বারের প্রচেষ্টায় প্রথম বারের মতো হুয়াসং-১৮ সামের একটি সামরিক গুপ্তচর স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ করেছে। এটি উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে উন্নত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) এর ফলে দেশটির পরমাণু শক্তিধর দেশটির সক্ষমতা আরও বেড়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে ২০২৩ সালকে বিশাল পরিবর্তনের বছর হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেন কিম। এই সময়ের মধ্যেই বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে পিয়ংইয়ং।

এর আগে কিম হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, শত্রুরা যদি উসকানি দেয় তবে পিয়ংইয়ং পারমাণবিক হামলা চালাতে দ্বিধা করবে না। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ওয়াশিংটনে বৈঠক করেছেন দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা। সেখানে তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষের ক্ষেত্রে পারমাণবিক প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এমনকি সিউল এবং এর মিত্র দেশগুলো কোনো পূর্ব শর্ত ছাড়াই উত্তর কোরিয়াকে সংলাপের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

Advertisement

দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে পারমাণবিক এবং কৌশলগত পরিকল্পনার বিষয়গুলো অন্তর্ভূক্ত ছিল। পিয়ংইয়ং যদি যুক্তরাষ্ট্র বা দক্ষিণ কোরিয়ায় পারমাণবিক হামলা চালায় তবে উত্তর কোরিয়ার শাসনের অবসান ঘটানো হবে বলে দুদেশের পক্ষ থেকে পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন: পরপর দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া

এ ধরনের খবর সামনে আসতেই কিম তার সেনাবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যুরোকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, শত্রুরা যখন পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে হামলার উস্কানি দেবে তখন পারমাণবিক হামলা চালাতে বিন্দু মাত্র দ্বিধা করা যাবে না।

টিটিএন