সরিষার মৌসুমে মাঠে মাঠে হলুদ ফুলের আনাগোনা। পৌষের ঝিরঝির হিমেল বাতাসে সেই ফুল আপন মনে দোল খাচ্ছে। ফুল ও ফুলের সুবাস মানুষকে বিমোহিত করছে। ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা মৌমাছিও। মৌমাছি দলবেঁধে মাঠের পর মাঠ ছুটে বেড়াচ্ছে। এমন দৃশ্য যশোরের শার্শার প্রতিটি মাঠে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
Advertisement
সরেজমিনে জানা গেছে, মাঠজুড়ে সরিষার চাষ হয়েছে। চাষিরা সরিষার পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। পাকা সরিষা সংগ্রহ ও মাড়াই করে ঘরে তোলার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। এবারও সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ায় তাদের মুখে হাসি ফুটেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, শার্শা উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে উপজেলায় ৬ হাজার ৩৬৬ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। চলতি বছর তা বেড়ে ৭ হাজার ১৫৬ হেক্টর হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সরিষার জাত হচ্ছে বারি ১৪, ১৭, ১৮ এবং বিনা ৪, ৯ ও ১০।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা
Advertisement
কৃষি বিভাগ বলছে, উপজেলার মাটি সরিষা চাষের উপযোগী। অনুকূল পরিবেশে এখানে কৃষকদের সময়োপযোগী উৎসাহ ও পরামর্শ দেওয়া হয়। এমনকি কৃষকদের মাঝে সময়মতো সরকারি প্রণোদনার বীজ, সার দেওয়ায় সরিষা চাষ বাড়ছে।
কুমরী গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, ‘গেল বছর ২ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর ৪ বিঘা জমিতে চাষ করেছি।’
কায়বা রুদ্রপুর গ্রামের চাষি নাজিমুদ্দিন জনি বলেন, ‘বরাবরই আমি মৌসুমে সরিষা চাষ করি। প্রতিবার ভালো ফলন ও দাম পেয়ে অনেক লাভবান আমি।’
আরও পড়ুন: ভবনের ছাদে হোক শীতকালীন সবজির বাগান
Advertisement
ডিহি ইউনিয়নের দরিদূর্গাপুর গ্রামের ইমান, শালকোনার রফিকুল ও ইয়াছিনসহ বেশ কয়েকজন জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী ১৬ অক্টোবর থেকে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত সরিষা চাষ করা যায়। সে অনুযায়ী কৃষকেরা উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। সরিষা চাষে সেচ ও রাসায়নিক সার কম দরকার হওয়ায় খরচও কম। এছাড়া সরিষার পাতা জমিতে পড়ে সবুজ সার তৈরি হয়, যা বোরো চাষে জৈব সারের চাহিদা মেটায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, ‘সরিষার আবাদ বৃদ্ধি করতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এ বছর উপজেলার ৫ হাজার ৫০০ কৃষকের মধ্যে বিঘাপ্রতি প্রণোদনার ১ কেজি সরিষার বীজ ও ২০ কেজি সার বিতরণ করা হয়েছে। এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় জমিতে দ্রুত জো এসেছে। আশা করি চাষিরা গত বছরের তুলনায় বেশি ফলন ও দাম পাবেন।’
মো. জামাল হোসেন/এসইউ/জেআইএম