গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানকার আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। হামাসের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদ্রা বলেন, সেখানে অনেকগুলো পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। খবর বিবিসির।
Advertisement
এদিকে ইসরায়েল এবং আরব গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য একটি নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে মিশর। বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে মাগাজি থেকে কাছাকাছি আল-আকসা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বেশ কিছু ফুটেজে বেশ কয়েকজন শিশুকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ‘কঠিন’ সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ইসরায়েলের
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে তিনটি বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। আশরাফ আল-কুদ্রা বলেন, একটি জনবহুল আবাসিক ব্লক ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
এক বাবা জানিয়েছেন, তিনি তার মেয়ে, এবং নাতি-নাতনিদের হারিয়েছেন। তিনি জানান, নিরাপদে থাকার জন্য তার পরিবারের সদস্যরা উত্তর গাজা থেকে মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিল।
তিনি বলেন, একটি ভবনের চতুর্থ তলায় থাকতো ওই পরিবারটি। দেয়াল ধসে তাদের ওপর পড়েছে। তিনি বলেন, আমার নাতি-নাতনি, আমার মেয়ে এবং মেয়ের স্বামী সবাই মারা গেছে। আমাদেরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকরাই লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। এখানে আর কোনো নিরাপদ জায়গা নেই। তারা আমাদের গাজা সিটি থেকে সরে যেতে বলেছিল। আমরা সেখান থেকে মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু এখানেও আমাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। সেখানে আহত হয়েছে আরও ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে ইসরায়েল। যদিও ইসরায়েলি বাহিনী এই অভিযানকে দীর্ঘায়িত এবং কঠিন বলে স্বীকার করেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান আরও বাড়িয়েছে তারা।
Advertisement
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়ে জোর দিয়েছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সব লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবেই।
আরও পড়ুন: গাজায় ২৪ ঘণ্টায় দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত
গাজা সিটি এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে তীব্র লড়াই চলছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসকে নির্মূলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তবে হামাসকে নির্মূলের অজুহাতে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলের বোমা হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে শত শত ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ ও শিশুরা।
টিটিএন