কৃষি ও প্রকৃতি

বিষমুক্ত লাউ চাষে সফল শার্শার শফিকুল

হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন যশোরের শার্শা উপজেলার উলাশী গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম। গোল ও লম্বা লাউ চাষ করে বীজ বপনের ৬০ দিনের মধ্যে তিনি ভালো ফলন পেয়ে খুশি।

Advertisement

শফিকুল লাউ চাষে জৈবের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছেন। তার সফলতা দেখে অন্য সবজি চাষিরা লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এর আগেও লাউ চাষে বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন বলে জানান শফিকুল।

সরেজমিনে জানা যায়, শফিকুল বিষ প্রয়োগ ছাড়াই ১ বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে মাচায় হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করেছেন। তার লাউ ক্ষেতে মাচার নিচে ঝুলছে ছোট-বড় শত শত সবুজ লাউ। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। এ লাউ চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে বিঘাপ্রতি ২৫ হাজার টাকা। বিষমুক্ত লাউ চাষের কারণে বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। উপজেলার বেনাপোল, নাভারণ, বাগআঁচড়া, শার্শা, কায়বা, শ্যামলাগাছী, কাঠুরিয়া, জিরেনগাছা, গাতিপাড়া, নিশ্চিন্তপুর, শিয়ালকোনা ও বসতপুর গ্রামের কৃষকদের লাউ চাষের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: ভবনের ছাদে হোক শীতকালীন সবজির বাগান 

Advertisement

কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, লাউ চাষে কোনো ধরনের বিষ প্রয়োগ করেননি। অল্প শ্রম, পুঁজি ও সীমিত জমিতে লাউ চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব। বাজারে লাউয়ের চাহিদা থাকায় বেশ লাভবান হচ্ছেন তিনি। সপ্তাহে ২ দিন এই ক্ষেত থেকে লাউ কেটে বিক্রি করেন।

শুরু থেকে এ পর্যন্ত তিনি প্রায় লাখ টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং ঠিকমতো পরিচর্যা করতে পারলে ক্ষেত থেকে আরও ৩-৪ হাজার লাউ উৎপাদন হবে। প্রতিটি লাউ ৩০ টাকা দরে বিক্রি করলেও ১ লাখ টাকা ঘরে তুলতে পারবেন। আগামীতে বড় পরিসরে লাউয়ের পাশাপাশি বিষমুক্ত ও নিরাপদ সবজি চাষ করতে চান তিনি।

শার্শার নাভারণ বাজারের আড়ৎদার নজির মিয়া বলেন, ‘লাউ একটি উপকারী সবজি। বাজারে এর চাহিদা বেশি। সাপ্তাহিক হাটের দিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিরা প্রচুর লাউ নিয়ে আসেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে শার্শার উৎপাদিত লাউ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।’

আরও পড়ুন: নীলফামারীতে কলার সাথী ফসলে আগ্রহী চাষিরা 

Advertisement

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, ‘এবার লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে লাউ চাষে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। কম খরচে লাভজনক আবাদ হিসেবে লাউ চাষ প্রতি বছরই বাড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের উন্নত জাতের লাউ বীজ সরবরাহের পাশাপাশি ফসল উৎপাদনে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। মানবদেহের জন্য নিরাপদ সবজি উৎপাদনে আমরা কৃষককে উদ্বুদ্ধ করছি।

মো. জামাল হোসেন/এসইউ/জিকেএস