খেলাধুলা

হাবিবুল বাশারের চোখে, আজকের জয় মধুর এক প্রতিশোধ!

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সাদা বলে এতকাল জয় ছিল না। আজ ‘সোনার হরিণ’ হয়ে ওঠা সেই জয়টিরও দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। তাও ২০৯ বল হাতে রেখে, ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।

Advertisement

পৌষের শুরুতে কুয়াশা ঢাকা ভোরে বাংলাদেশের আকাশে সূর্য ওঠার আগেই শনিবার কিউইদের মাত্র ৯৮ রানে (৩১.৪ ওভারে) অলআউট করে দিয়েছিল তানজিম সাকিব, শরিফুল ইসলাম এবং সৌম্য সরকাররা। এরপর মাত্র ১ উইকেট খুইয়ে ১৫.১ ওভারে জয় তুলে নিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত ৫১ এবং এনামুল হক বিজয় করেন ৩৭ রান।

বাংলাদেশের এমন জয়ে ভক্ত-সমর্থক সবাই উদ্বেলিত। এতকাল জানা ছিল, নিউজিল্যান্ডের সবুজ উইকেট, হিমশীতল পরিবেশ, কনকনে ঠান্ডা বাতাস এবং সুইং ও বাড়তি বাউন্সে কিউই ফাস্ট বোলারদের দৌরাত্ম্যে ত্রাহিমধুসুদন অবস্থা হতো বাংলাদেশের।

কিন্তু বাংলাদেশের ফাস্ট বোলার শরিফুল ও তানজিম সাকিব এবং জেন্টল মিডিয়াম সৌম্য সরকারের বলে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কিউই ব্যাটারদের নাভিঃশ্বাস উঠবে, আর শান্ত ও বিজয়রা হাত খুলে পিটিয়ে সহজেই ম্যাচ জিতে যাবেন, সেটা ছিল ভাবনারও অতীত।

Advertisement

অনেকেই মেলাতে পারছেন না। হাবিবুল বাশারও মেলাতে গিয়ে খানিক স্মৃতিকাতর হয়ে গেলেন। জাগো নিউজের সাথে শনিবার মুঠোফোন আলাপে নির্বাচক মন্ডলির এই সদস্যের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়া হলো আজকের এ জয়কে কিভাবে দেখছেন?

জবাব দিতে গিয়ে বাশার এক দারুন গল্প শোনালেন। একই সঙ্গেহ জানিয়ে দিলেন, এটা তার চোখে মধুর একটি প্রতিশোধ। কিভাবে?

সে গল্পটাই হাবিবুল বাশারের মুখে, ‘সত্যিই শনিবার ভোরে নেপিয়ারের ঘাসযুক্ত উইকেটে আমাদের পেস বোলারদের দুর্দান্ত বোলিং আর শান্ত ও বিজয়ের হাত খুলে খেলা দেখে খুব ভাল লেগেছে। এতকাল এ ধরনের উইকেটে আমরা খাবি খেতাম। আর আজ আমাদের পেসাররা কিউইদের নাভিঃশ্বাস তুলে ছাড়লো।’

‘আমাদের বোলিং তোড়ে নিউজিল্যান্ড ৯৮ রানে অলআউট। আর আমরা মাত্র ১ উইকেট খুইয়ে ১৫ ওভারেই ম্যাচ শেষ করে ফেলেছি, দেখে কি যে ভাল লেগেছে। বলে বোঝাতে পারবো না।’

Advertisement

‘দেখে শুধু ভালোই লাগেনি। একটি ঘটনাও মনে পড়লো। সন ও তারিখ আমার মনে নেই। খুব সম্ভবত কুইন্সটাউনে একবার আমাদেরও ঠিক এমন পরিণতি হয়েছিল। আমি ওয়ানডে দলে ছিলাম না। টেস্ট খেলতে পরে দলের সাথে মিলিত হয়েছিলাম। শেষ ওয়ানডেটা আমি মাঠে বসে দেখেছিলাম। সেখানে আমরা ঠিক এমন ১০০’র নিচে অলআউট হয়েছিলাম। আর ব্রেন্ডন ম্যাককালাম একাই আমাদের বোলারদর ইচ্ছেমত পিটিয়ে খেলা শেষ করে দিয়েছিলেন ৭/৮ ওভারে।’ ‘আজ আমরা দীর্ঘদিন পর সে পরাজয়ের মধুর প্রতিশোধ নিতে পারলাম। এটা আমার কাছে খুব তৃপ্তির ছিল।’ হাবিবুল বাশার একটুও বাড়িয়ে বলেননি। সেটা ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের কথা। কুইন্সটাউনে ড্যানিয়েল ভেট্টোরির নিউজিল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে হেরেছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের বাংলাদেশ। খেলা শেষ হয়েছিল মাত্র ৪৩.৫ ওভারে। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে গিয়েছিল ৯৩ রানে (৩৭.৫ ওভারে)। নিউজিল্যান্ড ক্যাপ্টেন ভেট্টোরি দখল করেছিলেন ৭ রানে ৫ উইকেট।

জবাবে নিউজিল্যান্ড মাত্র ৬ ওভারে বিনা উইকেটে জয় তুলে নিয়েছিল। ব্রেন্ডন ম্যাকালাম মাত্র ২৮ বলে ৬ ছক্কা আর ৯ বাউন্ডারিতে ৮০ রানের টর্নেডো ইনিংস উপহার দিয়ে অত দ্রুত খেলা শেষ করে দিয়েছিলেন।

এআরবি/আএইচএস