কুমিল্লা-২ (হোমনা ও মেঘনা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান এমপি সেলিমা আহমাদ। এরআগে তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। গত পাঁচ বছরে এ প্রার্থীর সম্পদ কমেছে। তবে বেড়েছে ঋণের পরিমাণ। তিনি স্বামীর কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন সোয়া এক কোটি টাকারও বেশি।
Advertisement
অন্যদিকে সরকারদলীয় এ প্রার্থীর তুলনায় গত পাঁচ বছরে তার স্বামী আবদুল মাতলুব আহমাদের সম্পদ বেড়েছে ছয় কোটি ৬৪ লাখ ৪১ হাজার ৯৩ টাকার।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা রিটার্নিং কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
হলফনামার তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, সেলিমা আহমাদের বার্ষিক আয় ৯২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪৪ টাকা। এরমধ্যে এমপি হিসেবে সম্মানী ভাতা ছয় লাখ ৬০ হাজার, মিটিং ফি সাত লাখ ৯৯ হাজার ২৭২ টাকা; শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে ৩০ লাখ ১ হাজার ২৬৯ টাকা, চাকরি হিসেবে নিটল মোটরস লিমিটেড থেকে পান ৩২ লাখ ২৪ হাজার ৮২৬ টাকা আর বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ও অন্যান্য ভাড়া মিলিয়ে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ৪০৭ টাকা পান।
Advertisement
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী তিনি ব্যবসায়ী হলেও গত পাঁচ বছরে তার ব্যবসা থেকে এক টাকাও আয় হয়নি। অথচ ২০১৮ সালের হলফনামার তথ্য বলছে, ওই সময়ে তিনি ব্যবসা থেকে আয় করেছেন ৪২ লাখ ১২ হাজার ৬২৪ টাকা।
অস্থাবর সম্পদ হিসেবে সেলিমা আহমাদ উল্লেখ করেছেন, নগদ টাকা আছে ৮৮ হাজার ৫৮৭ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬৩৭ টাকা; বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে আট কোটি ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৬৭০ টাকার; পোস্টাল, সেভিংসহ স্থায়ী আমানত বিনিয়োগ পাঁচ কোটি ৫১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৯০ টাকা। বাসা, ট্রাক, মোটর গাড়ি ও মোটর সাইকেল রয়েছে ৯২ লাখ ১১ হাজার ৮৩৫ টাকার। সোনাসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র রয়েছে ২১ লাখ টাকার।
স্থাবর সম্পদ হিসেবে কৃষিজমি রয়েছে ১৬ দশমিক ৬৫ বিঘা, যার মূল্য দেখানো হয়েছে দুই কোটি ৬১ লাখ ৫৩ হাজার ১০০ টাকা। অকৃষি জমি রয়েছে ২৩ লাখ ১৫ হাজার টাকার।
সেলিমা আহমাদের নামে ২৬ কোটি ১৫ লাখ ৮ হাজার ১৪০ টাকা মূল্যের রাজধানীর আদবর ও গুলশানে দুটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া গুলশান-১ এ রয়েছে দুই কোটি ৩ লাখ ৩ হাজার টাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট, হোমনায় এক কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার ৮০০ টাকা এবং তিতাসে ৩৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের দুটি বাড়ি।
Advertisement
২০১৮ সালে এ প্রার্থীর ঋণের পরিমাণ ছিল ১৮ কোটি ৫২ লাখ ৫ হাজার ৭৪১ টাকা। এবার ঋণ বেড়ে হয়েছে ১৯ কোটি ৭৩ লাখ ৫ হাজার ২৫৬ টাকা। এরমধ্যে প্রার্থীর স্বামী আবদুল মাতলুব আহমাদের কাছে ঋণ নিয়েছেন এক কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার, আত্মীয়-স্বজন থেকে ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৮ টাকা এবং অগ্রিম ভাড়া বাবদ এক লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
সেলিমা আহমাদের তুলনায় তার স্বামী আবদুল মাতলুব আহমাদের ১১৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ৭০৮ টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে। ২০১৮ সালে সেলিমা আহমাদের সম্পদ ছিল ৩১ কোটি ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৩৭১ টাকার। ২০২৩ সালে তার সম্পদ কমে হয়েছে ২৬ কোটি ১৯ লাখ ১৮ হাজার ৫০৫ টাকায়।
অন্যদিকে, ২০১৮ সালে স্বামী আবদুল মাতলুব আহমাদের সম্পদ ছিল ১৩৩ কোটি ৯৪ লাখ ৮ হাজার ১২০ টাকার। ২০২৩ সম্পদ বেড়ে হয়েছে ১৪০ কোটি ৫৮ লাখ ৪৯ হাজার ২১৩ টাকা।
জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/এএসএম