রাজধানীর তুরাগ, রামপুরা, মিরপুর, হাজারীবাগ ও বংশাল থানায় করা নাশকতার পাঁচ মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ১৩৫ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১০০ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার পাঁচটি পৃথক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
তুরাগ থানার মামলায় ৯৩ জনের কারাদণ্ডপাঁচবছর আগে রাজধানীর তুরাগ থানায় করা নাশকতার মামলায় বিএনপির ৯৩ নেতাকর্মীকে দুই ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শেখ সাদী এ কারাদণ্ড দেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে দুই ধারায় ৪ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও ১৪ দিনের কারাভোগ করতে হবে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় নাশকতার অভিযোগ তুলে তুরাগ থানায় মামলা করে পুলিশ। মামলাটি তদন্ত শেষে ৯৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
Advertisement
রামপুরা থানার মামলায় জামায়াতের ১৩ জনের কারাদণ্ডপাঁচবছর আগে রাজধানীর রামপুরা থানায় করা নাশকতার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর ১৩ নেতাকর্মীকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এ কারাদণ্ড দেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একমাসের কারাভোগ করতে হবে। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-আব্দুল কাদের, খান মতিউর রহমান, মো. লোকমান খান, মো. জহিরুল ইসলাম, মো. মাইনউদ্দিন, মো. আহসান হাবিব, মো. হাফেজ আব্দুল কাইউম ভাই, মো. ইকবাল কবির নিপু, সাখাওয়াত হোসেন রিফাত, মো. মিজানুর রহমান গালিব, চৌধুরী ইভান, মো. আজিজুল্লাহ ভুইয়া, মো. সালেহ আহমেদ ও লুৎফর রহমান।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে রাজধানীর রামপুরা থানায় স্থানীয় জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে পুলিশ। মামলাটি তদন্ত শেষে ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
মিরপুর থানার মামলায় ৮ জনের কারাদণ্ডরাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা নাশকতার মামলায় আট বিএনপি নেতাকর্মীকে দুই ধারায় আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসাথে চলায় তাদের দুইবছর কারাভোগ করতে হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এ কারাদণ্ড দেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার আদেশে দেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও একমাসের বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-মো. ইমরান, মো. আ. কুদ্দুস, মো. মিজানুর রহমান, আসিফ হোসেন রানা, মো. আমির হোসেন, মো. কামরুল ইসলাম, মো. আক্তার হোসেন ও মানিক দত্ত। এদিকে মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
Advertisement
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মিরপুর এলাকায় বিএনপির মিছিলে নাশকতার অভিযোগে ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর মামলাটি দায়ের করে পুলিশ। এ মামলার চার্জশিটভু্ক্ত আসামি ছিলেন ১০ জন।
হাজারীবাগ থানার মামলায় ৬ জনের কারাদণ্ড১৩ বছর আগে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার নাশকতার মামলায় বিএনপির ছয় নেতাকর্মীকে দুই ধারায় দেড় বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। মামলাটিতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিটভুক্ত বাকি ৫১ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবির এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন-মো. আব্দুল লতিফ, মো. আজিজ, মো. ছনাউল্লাহ, মো. হাসু মিয়া, স্বপন ও আবুল খায়ের লিটন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের নভেম্বরে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় এ মামলাটি করে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে ৫৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
বংশাল থানার মামলায় ১৫ জনের কারাদণ্ডএক দশক আগে পুরান ঢাকার বংশাল থানায় করা মামলায় ১৫ বিএনপি নেতাকর্মীকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার চার্জশিটভুক্ত বাকি ৪৭ আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। এ মামলাটির রায় ঘোষণা করেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হরতালে নাশকতার অভিযোগে ২০১৩ সালের নভেম্বরে ঢাকার বংশাল থানায় এ মামলাটি করে পুলিশ। তদন্ত শেষে মোট ৬২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলার বিচার চলাকালে মোট ১৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন
জেএ/এমআইএইচএস/জেআইএম