৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে পদ বাড়িয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিতে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সামনের দুই ফটক আটকে অবস্থান নিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। দাবি আদায়ে তারা দুই ভাগে ভাগ হয়ে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।
Advertisement
এতে অফিস সময় শেষে বিকেল ৫টায় কমিশনের সামনের ফটক হয়ে বের হতে পারছিলেন না কর্মকর্তারা। পরে অবশ্য তাদের অনেককে পেছনের ফটক দিয়ে বেরিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে পিএসসি সূত্র।
চাকরিপ্রত্যাশীরা বলছেন, ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের বিজ্ঞপ্তি বাতিল এবং পদ বাড়িয়ে পুনরায় পছন্দক্রম নেওয়ার সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তারা ফটক ছাড়বেন না।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পিএসসির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন চাকরিপ্রার্থীরা। দুপুরে কর্মসূচিতে উপস্থিতির সংখ্যা আরও বাড়ে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে পিএসসির দুই ফটকের সামনে বসে বিক্ষোভ শুরু করেন প্রার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৫টায় আন্দোরনকারীরা পিএসসির ফটক ছেড়ে যান। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা।
Advertisement
তবে বিকেল ৫টার পর পিএসসির দুজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অফিস সময় শেষে পেছনের দিকের ফটক দিয়ে বেরিয়ে গেছেন। এখনো কেউ কেউ আছেন। তারাও হয়তো ওদিক দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারেন।
অন্যদিকে, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে পিএসসির সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো প্রার্থীদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান, দুজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।
আন্দোলনরত প্রার্থীদের দাবি—ক্যাডার ও নন-ক্যাডারের ফল পৃথকভাবে প্রকাশ, নন-ক্যাডারের বিজ্ঞপ্তি বাতিল এবং পদ বাড়িয়ে পুনরায় পছন্দক্রম নিতে হবে। এ দাবি আদায়ে তাদের কেউ কাফনের কাপড় পরে, কেউ বঙ্গবন্ধু আবার কেউ শেখ হাসিনার ছবি হাতে পিএসসির সামনে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই স্লোগান দিচ্ছেন প্রার্থীরা।
Advertisement
কাফনের কাপড় পরে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সিরাজুল তালুকদার বলেন, একটা বিসিএসের বিজ্ঞপ্তির পর পরীক্ষা শেষ করতে তিন থেকে চার বছর সময় লেগে যায়। আমাদের তারুণ্য এখানেই ফুরিয়ে যায়। অথচ লিখিত পরীক্ষায় টিকে মৌখিক পরীক্ষা অংশ নিয়েও আমাদের এখন খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। এ বৈষম্য আমরা মানবো না। শেষ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
বিকেলে প্রার্থীদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আনন্দ কুমার বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, ‘তারা এখানে কর্মসূচি করছেন কেন সেটাই বুঝতে পারছি না। পদ বাড়ানোর দাবি তো আমরা পূরণ করতে পারবো না। এটা (শূন্য পদ নির্ধারণ) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় করে থাকে। যারা আন্দোলন করছেন, তাদের জনপ্রশাসনে যাওয়া উচিত।’
জানা গেছে, ৪৩তম বিসিএসে ক্যাডার ও নন-ক্যাডারে একসঙ্গে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে পিএসসি। ক্যাডার পদের ফল প্রস্তুতের কাজ চলমান। পাশাপাশি নন-ক্যাডারে শূন্য পদ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে যারা নন-ক্যাডারে চাকরি করতে চান, শূন্য পদে তাদের পছন্দক্রমও (চয়েজ) নিয়েছে পিএসসি।
এএএইচ/এমএএইচ/জেআইএম