রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই আগুনে নিঃশেষ হয়ে যায় চারটি জীবন। নিহতদের মধ্যে এক মা ও তার শিশুসন্তান ছিল। আগুনের ১ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এসেছে জাগো নিউজের কাছে।
Advertisement
এতে দেখা গেছে, ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পার হওয়ার পর সৈনিক ক্লাবের আগে ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সৈনিক ক্লাব পর্যন্ত দুই শতাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণের পর এটি নিশ্চিত করে গোয়েন্দা পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে আগুন দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। সকাল পৌনে ৭টার দিকে নির্বাপণ হয় আগুন। পরে একটি বগি থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার ফাইটাররা।
আরও পড়ুন: আমরা তো রাজনীতি করি না, স্ত্রী-সন্তানকে কেন পুড়িয়ে মারা হলো?
Advertisement
ঘটনার পর ছায়াতদন্ত শুরু করেছে র্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
রেলওয়ে পুলিশের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। যদিও আমরা এখন পর্যন্ত জড়িত কাউকে শনাক্ত বা গ্রেফতার করতে পারিনি।
যারা ট্রেনে আগুন দিয়েছে তাদের পশু বলে মন্তব্য করেছেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার। তিনি বলেন, দু-একটি বাস পুড়িয়ে হয়তো আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না। তারা মনে করছে এমন কোনো নৃশংস-পৈশাচিক ঘটনা ঘটাবে যাতে করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।
আরও পড়ুন: রাজনীতি মানুষকে বাঁচাতে, মারতে নয়: মানবাধিকার কমিশন
Advertisement
এদিকে মঙ্গলবার রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগ ও চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
পুরো ঘটনা তদন্ত না করে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সম্প্রতি রেল দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, নাশকতাকারীরা যাত্রী হয়ে ট্রেনে উঠলে রেলযাত্রা নিরাপদ করা তো সম্ভব না। বিএনপি-জামায়াত ২০১৩-১৪ সালেও একই ঘটনা ঘটিয়েছে। এখন বাসের বদলে ট্রেনকে তারা হাতিয়ার বানিয়েছে।
টিটি/জেডএইচ/জেআইএম