বর্তমানে দেশবাসীর অন্যতম সমস্যা মূল্যস্ফীতি। ফলে স্বল্প আয় দিয়ে সংসারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। তবে সামনের মাসগুলোতে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে মনে করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
Advertisement
সংস্থটি জানিয়েছে, নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও গত জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার দুই অঙ্কের খুব কাছাকাছি ছিল। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখা, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর বিষয়ে উদ্যোগ, খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমে আসার ফলে আগামী মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক- ডিসেম্বর ২০২৩ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার কত হতে পারে- সে বিষয়ে এই প্রতিবেদনে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এর আগে গত এপ্রিলে প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে বলা হয়, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার চলতি অর্থবছর ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ওই পূর্বাভাসই বহাল রাখে এডিবি।
Advertisement
আরও পড়ুন>> রমজানের আগে এলসি খোলা নিয়ে চিন্তায় ব্যবসায়ীরা
টানা বেশ কয়েক মাস ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। গত জুন থেকে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গড় মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি ছিল। এমন প্রবণতায় সম্প্রতি এর লক্ষ্যমাত্রায় সংশোধন এনেছে সরকার। চলতি অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে, চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে তা এখন ৭ শতাংশের মধ্যে রাখতে চাইছে সরকার।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে মূল্যস্ফীতি হতে পারে পারে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বরে একই পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। এ অঞ্চলের পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখার কারণ হিসেবে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ ও নেপালে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কথা বলা হয়েছে এডিবির প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে এশিয়া অঞ্চলের মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস আগের তুলনায় কিছুটা বাড়িয়ে ধরা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বাংলাদেশ, কাজাখস্থান, মিয়ানমার ও কোরিয়ায় আশঙ্কার চেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতির কথা বলা হয়েছে।
এদিকে প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানো হয়েছে। তবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কত হতে পারে তা বলা হয়নি। এতে বলা হয়েছে, রপ্তানি ও উৎপাদনে মাঝারি প্রবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের ঘাটতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং রপ্তানি বাজারগুলোতে অর্থনীতির ধীরগতির কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমতে পারে। আগামী জানুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার ঝুঁকিও এর কারণ হতে পারে বলে মনে করছে এডিবি।
Advertisement
এর আগে গত এপ্রিলে প্রকাশিত এডিবির প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরের জন্য ৬ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়। সেপ্টেম্বরেও এই পূর্বাভাস বহাল রাখে এডিবি।
সম্প্রতি চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাও সংশোধন করেছে সরকার। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
এমওএস/ইএ/এএসএম