ভালো ক্রিকেটার ছাপিয়ে তার পরিচয়টা হয়ে দাঁড়িয়েছিল হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের প্রিয় ছাত্র। বারবার হাথুরু সৌম্যকে কেন দলে চান, প্রথম ওয়ানডেতে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর সেই প্রশ্ন আরও জোরেসোরে উঠতে থাকে।
Advertisement
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে তো অসহায় কণ্ঠে হাথুরু বলেই ফেলেন, 'সৌম্য কেন রান করতে পারছে না, বুঝলাম না। তার সমস্যাটা কী, সেটাও বুঝতে পারছি না।'
আসলে হাথুরু কোচ হিসেবে প্রথম মেয়াদে যে সৌম্যকে চিনতেন, এই সৌম্য যেন ঠিক ততটাই অচেনা। কোনো ধরনের ক্রিকেটেই সৌম্য নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না। তারপরও হাথুরু বিশ্বাস হারাননি। প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটে-বলে চরম ব্যর্থ সৌম্যকে দ্বিতীয় ম্যাচেও একাদশে রাখেন। খারাপ করলে এটাই হয়তো সৌম্যর হতো শেষ!
না। সৌম্য তার ওপর আস্থা রাখার প্রতিদানটা এমনভাবেই দিলেন, কথা বলার আর জায়গা রইলো না। এক ইনিংসেই সব কিছুর জবাব দিয়ে দিলেন সৌম্য। জানিয়ে দিলেন, তিনি হারিয়ে যাননি। এখনও নিজের দিনে তিনি একাই প্রতিপক্ষকে দুমড়েমুচড়ে দিতে পারেন।
Advertisement
ওপেন করতে নেমে চাপের মুখে ১৫১ বলে সৌম্য খেলে দিলেন ১৬৯ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস। যে ইনিংসটি তিনি সাজান ২২টি চার আর ২টি ছক্কায়।
আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড গড়েছেন সৌম্য। সবমিলিয়ে ওয়ানডেতে দেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সেরা ইনিংসের মালিক এখন তিনি।
২০২০ সালে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন লিটন দাস। সৌম্য মাত্র ৮ রানের জন্য তাকে পেছনে ফেলতে পারেননি। ইনিংসের পাঁচ বল বাকি থাকতে ও'ররকির বলে এক্সট্রা কভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য।
তবে দেশের সেরা ইনিংসের মালিক হতে না পারলেও উপমহাদেশের সেরা ব্যাটারের তালিকায় সবার ওপরে নিজের নাম লিখিয়ে নিয়েছেন সৌম্য। পেছনে ফেলেছেন শচিন টেন্ডুলকারের মতো কিংবদন্তিকে।
Advertisement
সৌম্যর ১৬৯ রানের ইনিংসটি এখন নিউজিল্যান্ডের মাঠে এশিয়ার কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে ২০০৯ সালে করা শচিনের অপরাজিত ১৬৩ রানের ইনিংসটিই ছিল সেরা।
এমএমআর/এএসএম