৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল ও পদসংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন প্রার্থীরা। রোববার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সামনে এ কর্মসূচি করেন তারা।
Advertisement
এদিকে, বিকেল ৩টার দিকে সেখানে আসেন পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আনন্দ কুমার বিশ্বাস ও পিএসসি চেয়ারম্যানের একজন ব্যক্তিগত সহকারী। তারা আন্দোলনরত প্রার্থীদের জানান, পদ বাড়ানো-কমানোর বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রার্থীদের দাবি জানানোর পরামর্শ দেন তারা।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সেখান থেকে চলে যান প্রার্থীরা। তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের দাবি জানাতে সচিবালয়ে যান। বিকেল ৪টা পর্যন্ত তারা সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন প্রার্থীরা।
আন্দোলনকারীদের দাবি- বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে ১ হাজার ৩৪২টি শূন্য পদে পছন্দক্রম চেয়ে যে বিজ্ঞপ্তি পিএসসি প্রকাশ করেছে, তা বাতিল করতে হবে। আগের কয়েকটি বিসিএসে নন-ক্যাডারে যত সংখ্যক শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবারও নিয়োগের সুপারিশ করতে হবে।
Advertisement
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার প্রার্থীরা জানান, ৪১তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে ফল প্রকাশ করা হয়েছে মাত্র ১৭ দিন আগে। এরপরই আবার ৪৩তম বিসিএসে নন-ক্যাডারের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পিএসসি। তারা এ মাসের মধ্যেই একসঙ্গে ৪৩তম বিসিএসের ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করতে চাইছেন। ফলে ৪৩তম বিসিএসে পদসংখ্যা খুবই কম।
তারা বলেন, বিসিএসের দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া শেষ করে পাস করার পরও আমাদের চাকরি হবে না। বেকার হয়ে ঘুরতে হবে। এর চেয়ে কষ্টকর কিছু হতে পারে না। ৪১তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে পদ ছিল ৪ হাজার ৫৩টি। সেখানে এবার (৪৩তম বিসিএস) পদ মাত্র ১ হাজার ৩৪২টি। আমাদের সঙ্গে চরম বৈষম্য করা হচ্ছে। এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে পদসংখ্যা বাড়িয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হোক। পিএসসি ও সরকারের উচিত একটু দেরিতে হলেও শূন্য পদ বাড়িয়ে ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশের ব্যবস্থা করা।
গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে ৪৩তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে ১ হাজার ৩৪২ শূন্যপদে নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পিএসসি। পদগুলোর মধ্যে নবম গ্রেডের ১৯৬টি, দশম গ্রেডের ৮৬১টি, ১১তম গ্রেডের ৬টি এবং ১২তম গ্রেডের ২৭৯টি। এসব পদে প্রার্থীদের কাছ থেকে পছন্দক্রম চাওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রার্থীরা অনলাইনে পছন্দক্রম দিতে পারবেন। এ প্রক্রিয়া চলবে ১৯ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা আরও বাড়তে বা কমতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
Advertisement
২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালের জুলাইয়ে লিখিত পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করে পিএসসি। গত ২০ আগস্ট লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৯ হাজার ৮৪১ জন।
৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী—বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ কর্মকর্তা নেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পুলিশ ক্যাডারে ১০০, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫, শিক্ষা ক্যাডারে ৮৪৩, অডিটে ৩৫, তথ্যে ২২, ট্যাক্সে ১৯, কাস্টমসে ১৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এএএইচ/এমকেআর/এএসএম