নাশতকার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতার দেখনোসহ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। একই মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেফতার দেখনোসহ ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।
Advertisement
গত ১৪ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পল্টন মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সুমিত কুমার সাহা এ আবেদন করেন। আগামী সোমবার এ বিষয়ে শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলকে পল্টন থানার মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন
পুলিশের আবেদনে বলা হয়েছে, ‘এজাহারনামীয় ও তাদের সহযোগী আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বেআইনি জনতাবদ্ধে দাঙ্গা হাঙ্গামা করতে বাঁশের লাঠি নিয়ে সজ্জিত হয়ে পুলিশকে আক্রমণ, বলপ্রয়োগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গুরুতর জখম করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ ব্যক্তি ও সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করে। উল্লেখিত আসামিরা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। তারা ঘটনার দিন নাশকতা ও অরাজক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রকাশ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামিরা পল্টন মডেল থানার সামনে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ এবং ককটেল বিস্ফোরণ করে পুলিশ সদস্যদের গুরুতর আহত করে।’
Advertisement
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে উল্লেখিত দুই আসামিকে (মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু) এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোপূর্বক মামলার রহস্য উদঘাটন, পলাতক আসামিদের গ্রেফতার, ককটেল নিক্ষেপকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে জিজ্ঞাসাবাদ ও অভিযান পরিচালনার জন্য ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: নীরব-মজনুসহ বিএনপির ৪৭ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড
এদিকে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুল শুনানির জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ দিন নির্ধারণ করেন।
এর আগে, গত ২৯ অক্টোবর এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মির্জা ফখরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে এ মামলায় কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষ জামিন চেয়ে আবেদন করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত জামিন নামঞ্জুর করে ফখরুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর গত ২ নভেম্বর তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।
Advertisement
আবেদনের পর জামিন শুনানির জন্য ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত। ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষ জামিন শুনানি পেছানোর জন্য আবেদন করে। এরপর আদালত জামিন শুনানি পিছিয়ে ২২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। ওইদিন শুনানি শেষে জজকোর্ট ফখরুলের জামিন নামঞ্জুর করেন। এরপর গত ৫ ডিসেম্বর উভয় আদালতে তার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে ৭ ডিসেম্বর রুল দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন। রাষ্ট্রপক্ষকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: গ্রেফতার না দেখালেও মির্জা ফখরুলের ১০ মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন
আরেক মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে ২ নভেম্বর দিনগত রাত পৌনে ১টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ (৩২) নিহতের ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর ৩ নভেম্বর আমীর খসরুকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তের স্বার্থে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক মো. তরীকুল ইসলাম। শুনানি শেষে আদালত ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক আছেন।
জেএ/কেএসআর/এএসএম