প্রতিষ্ঠার ৯ বছর পর নিজস্ব ভবন পাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম গণহত্যা ‘গণহত্যা জাদুঘর’। প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনার সাউথ সেন্ট্রাল রোডে নির্মিত সাত তলার ভবনটি ডিসেম্বরে চালুর কথা রয়েছে।
Advertisement
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১৭ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন ‘১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করেন। নগরীর কয়লাঘাট এলাকায় একটি ছোট বাড়িতে শুরু হয় এ জাদুঘরের যাত্রা। জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধ-গণহত্যার দুর্লভ স্মারক, গণহত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, বিভিন্ন অস্ত্র, মুক্তিযোদ্ধাদের পুড়িয়ে হত্যা করার বয়লারের অংশ বিশেষ, স্ত্রীর কাছে শহীদ তাজউদ্দিনের শেষ লেখা চিঠি, জেনারেল নিয়াজী ও রাও ফরমান আলীর গোপন ব্লু-প্রিন্ট, ছবি ও শহীদদের স্মৃতি চিহ্ন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিসপত্র, শহীদদের দেহাবশেষের নিদর্শন, প্রতিরোধ যুদ্ধে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রের গ্যালারি, দেশ বিদেশের শিল্পীদের গণহত্যা নির্যাতন নিয়ে আঁকা ৩০টি তৈলচিত্র রয়েছে। দর্শনার্থীরা এসব দেখে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ভাস্কর্যে গণহত্যা ও নির্যাতন
জাদুঘরের ইলেক্ট্রনিক আর্কাইভে রয়েছে প্রায় ৬ হাজার মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত আলোকচিত্র। এখানে রয়েছে গণহত্যা-নির্যাতন গবেষণা কেন্দ্র। জাদুঘর ও আর্কাইভ পরিচালিত হচ্ছে ট্রাস্টের অধীনে। শুধু তাই নয়, নিয়মিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের ওপর গবেষণাপত্র প্রকাশ করে আসছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে জেলায় সংঘটিত গণহত্যার ওপর জরিপ শুরু করেছেন তারা।
Advertisement
আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের ডেপুটি কিউরেটন মো. রোকনুজ্জামান বাবুল জানান, গণহত্যা-নির্যাতন নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় ও আধুনিক অনলাইন-অফলাইন আর্কাইভ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। জেলা ভিত্তিক ৭১ এর বধ্যভূমি ও গণকবর চিহ্নিতকরণের কাজ করছি।
তিনি বলেন, জাদুঘরের জন্য খুলনার সাউথ সেন্ট্রাল রোডে সাত তলার একটি ভবন নির্মাণাধীন। যেখানে লাইব্রেরি, গবেষণাগার, আর্কাইভ, অডিটরিয়ামসহ একটি পরিপূর্ণ কালচারাল সেন্টার তৈরি হচ্ছে।
খুলনার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাস জানান, জাদুঘরের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এখনো সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। ভবনটি ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। চলতি ডিসেম্বরে এটা জাদুঘর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু করোনাসহ নানা সমস্যার কারণে কাজ থমকে যায়। সব সমস্যা কাটিয়ে ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
Advertisement
আলমগীর হান্নান/আরএইচ/এমএস