সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে যুবলীগ নেতার নামে ধর্ষণ মামলা করে হুমকিতে রয়েছেন এক তরুণী। তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
Advertisement
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়কে জহুরা মল্লিকা ভবনে একটি জাতীয় পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কলেজপড়ুয়া ওই তরুণী।
অভিযুক্ত আলী আসলাম কাজীপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিংড়াবাড়ী গ্রামের শাহ আলীর ছেলে।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আলী আসলামের স্ত্রী তার বান্ধবী। সেই সুবাদে আলী আসলামের সঙ্গে পরিচয়। একপর্যায়ে তাকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখান আসলাম। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল কাগজপত্র নিয়ে তার বাড়িতে যেতে বলেন। সরল বিশ্বাসে তার বাড়িতে যান ওই তরুণী। এসময় বাড়িতে অন্য কেউ ছিলেন না। এ সুযোগে আলাপচারিতার একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণ করেন আসলাম।
Advertisement
বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য তিনি ভয়ভীতি দেখান। পরবর্তীসময়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন আসলাম। পরে তিনি বিয়ের জন্য চাপ দিলে টালবাহানা শুরু করেন তিনি। একপর্যায়ে বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেন।
১ ডিসেম্বর দুপুরে বিয়ের দাবিতে আসলামের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন ওই তরুণী। ওইদিন রাতে আসলাম তাকে বিয়ে করার কথা বলে তার পরিচিত একজনের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তিনি মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সঙ্গে কোনো শারীরিক সম্পর্ক হয়নি ও আসলামের প্রতি তার কোনো অভিযোগ নেই মর্মে স্ট্যাম্পে সই নেন। এর ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে প্রচার করেন।
এ ঘটনায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান ওই কলেজছাত্রী। পরিবারের লোকজন সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে মামলা করেন তিনি।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ‘মামলা করার পর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজীসহ শীর্ষনেতারা মামলা তুলে নিতে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
Advertisement
এদিকে অভিযুক্ত আলী আসলাম ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে। তার বক্তব্য জানতে ফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কাজীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজী বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ওই তরুণী এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তবে আসামি পলাতক। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এম এ মালেক/এসআর/এমএস