আন্তর্জাতিক

নারীরা কখন চাকরি ছাড়েন?

ঘরে ও বাইরের দায়িত্ব একসঙ্গে সামলানো সহজ নয়। কিন্তু অনেক নারীই রয়েছেন, যারা দুটি দিক সমান দক্ষতায় সামাল দেন। যত দিন যাচ্ছে, নারীদের স্বনির্ভরতার হার তত বাড়ছে। এটি সমাজের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দিক। তবে কিছু পরিস্থিতিতে যখন পেশা ও সংসারের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হয়, তখন নারীরা সংসারকেই কাছে টেনে নেন। সম্প্রতি এক আলোচনায় তেমনটাই জানান স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান অরুন্ধতী ভট্টাচার্য।

Advertisement

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস টুডের আয়োজনে ‘দ্য আইটি ওমেন’ নামে এক আলোচনা সভায় অরুন্ধতী বলেন, চাকরি ছাড়ার বিষয়ে আমরা একটি জরিপ করেছি। তাতে দেখা গেছে, তিনটি পরিস্থিতিতে নারীরা সবচেয়ে বেশি চাকরি ছাড়েন।

আরও পড়ুন>> ‘চাকরি হারানোর ভয়ে গর্ভধারণের খবর গোপন করেন নারী শ্রমিকরা’

প্রথমত, মা হওয়ার পর চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবেন অনেকে। সন্তানকে ছোট থেকে বড় করে তোলার দায়িত্ব বাবা-মা দুজনের হলেও, সন্তানকে বুক দিয়ে আগলে রাখতে চান মা। অরুন্ধতী জানান, সন্তানকে কাছের মানুষের দায়িত্বে রাখতেও অনেক সময়ে ভরসা পান না মায়েরা। তাই নিজের পেশাগত জীবনের কথা না ভেবে, আর্থিক স্বাধীনতায় জলাঞ্জলি দিয়ে সন্তানকে বড় করে তুলতে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

Advertisement

দ্বিতীয় পরিস্থিতি হলো, সন্তান যখন বোর্ডের পরীক্ষা দিতে যায়। সন্তানের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। তা নিয়ে ছেলেমেয়েরা যতটা না ভয়ে থাকে, তার চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন মায়েরা। সন্তানের পাশে প্রতি মুহূর্তে থাকার জন্য আকুল হয়ে ওঠেন। কর্মক্ষেত্রে গিয়েও মন পড়ে থাকে ছেলেমেয়ের পড়াশোনায়। সন্তানকে সার্বক্ষণিক সাহায্য করতে না পারার আক্ষেপও তৈরি হয় কারও কারও মনে।

আরও পড়ুন>> ১৩ বছর সংসার সামলানোর অভিজ্ঞতা, চাকরির সিভিতে সগর্ব ঘোষণা নারীর

এই দোটানা থেকে মুক্তি পেতে চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন নারীরা। নিজের ক্যারিয়ারের চেয়ে সন্তানের পরীক্ষা, পড়াশোনাই তখন বড় হয়ে ওঠে মায়েদের কাছে।

তৃতীয় যে পরিস্থিতিতে নারীরা চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তা হলো, বাবা-মা কিংবা শ্বশুর-শাশুড়ি অসুস্থ হয়ে পড়লে। বয়স হলে কাছের মানুষের প্রতি নির্ভরযোগ্যতা অনেক বেড়ে যায়। ছেলেমেয়েদেরও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব বেড়ে যায়। নার্স কিংবা পেশাদার কোনো তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে অসুস্থ, বৃদ্ধ বাবা-মাকে রাখলে মনের মধ্যে একটা অস্বস্তি চলতেই থাকে। নিজেদের দোষী মনে হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন>> ‘অসহিষ্ণু’ বস/ তিন দিনেই চাকরি ছাড়তে বাধ্য হলেন তরুণী

তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে কাছের মানুষদের জন্য নিজেদের ক্যারিয়ার উৎসর্গ করেন নারীরা। বাড়ির বয়স্ক সদস্যদের দেখাশোনার দায়িত্ব তুলে নেন নিজের কাঁধে।

সূত্র: বিজনেস টুডে, আনন্দবাজার পত্রিকাকেএএ/